ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

বাংলাদেশের ১০টি সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক, ২০২৪-এর পারফরম্যান্সে যারা এগিয়ে

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ১৯ ০৯:৩৮:৩৯
বাংলাদেশের ১০টি সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক, ২০২৪-এর পারফরম্যান্সে যারা এগিয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ব্যাংক খাতের নানা সংকট—ঋণ জালিয়াতি, অনিয়ম ও তারল্য ঘাটতির কারণে জনগণের মধ্যে উদ্বেগ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। অনেক আমানতকারী ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন, আবার কেউ দ্বিধায় পড়েছেন—কোন ব্যাংকে টাকা রাখলে তা নিরাপদ থাকবে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি নিরাপদ ব্যাংকের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো আর্থিক স্থিতিশীলতা, স্বচ্ছতা, প্রযুক্তিনির্ভর সেবা এবং গ্রাহকের আমানতের সুরক্ষা। এসব সূচকের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ করে তুলনামূলকভাবে নির্ভরযোগ্য ১০টি ব্যাংকের তালিকা তৈরি করা হয়েছে।

১. স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক

বিদেশি মালিকানাধীন এই ব্যাংকটি ২০২৪ সালে ৩,৩০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪১ শতাংশ বেশি। শক্তিশালী মূলধন কাঠামো, উন্নত ডিজিটাল সেবা এবং বিস্তৃত শাখা নেটওয়ার্কের জন্য এটি গ্রাহকদের কাছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত।

২. ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড

দেশের সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবা প্রদানকারী এই প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকসেবার মান, নিরাপদ লেনদেন ও ভালো মুনাফার কারণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে।

৩. ব্র্যাক ব্যাংকবিকাশ-এর সঙ্গে অংশীদারিত্ব, ৭৩ শতাংশ নিট মুনাফা বৃদ্ধি এবং প্রযুক্তিনির্ভর পরিচালনার কারণে ব্র্যাক ব্যাংক উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। ব্যাংকটির দ্রুত প্রবৃদ্ধি এটিকে এগিয়ে রেখেছে।

৪. ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড

২০২৪ সালে ৬৬০ কোটি টাকা নিট মুনাফা এবং ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদানের পাশাপাশি বিনিয়োগ ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে এই ব্যাংক চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।

৫. পুবালি ব্যাংক লিমিটেড

রাষ্ট্রায়ত্ত এই ব্যাংক ধারাবাহিক সংস্কারের মাধ্যমে খেলাপি ঋণের হার ২.৬৭ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে। গ্রাহক আস্থা এবং রেমিটেন্স সংগ্রহে সাফল্য এটিকে পঞ্চম স্থানে রেখেছে।

৬. ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড

নানা বিতর্ক থাকলেও এখনো এটি দেশের সর্বোচ্চ রেমিটেন্স আহরণকারী ব্যাংক। আন্তর্জাতিক লেনদেন, অবকাঠামোগত শক্তি এবং নিরাপদ আমানতের দিক থেকে এটি ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।

৭. সোনালী ব্যাংক লিমিটেড

রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন এই ব্যাংকটি পুনরায় মুনাফায় ফেরার চেষ্টা করছে। পাশাপাশি দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়ে দেশের ব্যাংক খাতে ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখছে।

৮. সিটি ব্যাংক পিএলসি

২০২৪ সালে আর্থিক স্থিতিশীলতা, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কারণে সিটি ব্যাংক প্রথম সারির ব্যাংকের তালিকায় প্রবেশ করেছে।

৯. প্রাইম ব্যাংক পিএলসি

৭০০ কোটি টাকা নিট মুনাফা ও ২০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণার মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা অর্জন করেছে। এর মূলধন পর্যাপ্ততা অনুপাত (CAR) ১৮.২৬ শতাংশ, যা ব্যাংক খাতে অন্যতম সর্বোচ্চ।

১০. উত্তরা ব্যাংক পিএলসি

১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ব্যাংক দীর্ঘমেয়াদে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। ২০২৪ সালে ৪৭৮ কোটি টাকা নিট মুনাফা এবং ৩০.৭৫ শতাংশ আয়ের প্রবৃদ্ধি নিয়ে এটি দশম অবস্থানে রয়েছে।

যদিও দেশের ব্যাংকিং খাত এখনও নানা চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবুও এই ১০টি ব্যাংক আর্থিক শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং টেকসই সেবার মাধ্যমে গ্রাহকের অর্থকে নিরাপদ রাখতে সক্ষম হয়েছে। সচেতন গ্রাহকদের জন্য এসব ব্যাংক হতে পারে আস্থার ঠিকানা।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ