ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

কেন মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বেশি বিষণ্নতায় ভোগেন

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ১৪ ০৯:৫০:৩৯
কেন মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় বেশি বিষণ্নতায় ভোগেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: গবেষণায় দেখা গেছে, ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বিষণ্নতায় (ডিপ্রেশন) আক্রান্ত হন বেশি। বিষয়টি কেবল আবেগপ্রবণতার সঙ্গে সম্পর্কিত নয়—এর পেছনে রয়েছে শারীরবৃত্তীয়, সামাজিক ও মানসিক নানা কারণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মেয়েদের জীবনের বিভিন্ন ধাপে ঘটে যাওয়া পরিবর্তনগুলো তাদের মানসিক স্বাস্থ্যে গভীর প্রভাব ফেলে।

চলুন জেনে নিই, মেয়েদের বিষণ্নতা বেড়ে যাওয়ার পেছনে কোন কোন কারণগুলো কাজ করে:

১. হরমোনজনিত পরিবর্তন

মাসিক চক্র, গর্ভাবস্থা, সন্তান জন্মদানের পরবর্তী সময় এবং মেনোপজ—এই সময়গুলোতে নারীদের শরীরে হরমোনের বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটে। এই ওঠানামা তাদের আবেগের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে, যা বিষণ্নতার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়।

২. সামাজিক চাপ ও ভূমিকা পালনের চাপ

নারীরা পরিবার, সমাজ এবং কর্মজীবনে একাধিক দায়িত্ব পালন করেন। ‘ভালো মেয়ে’, ‘ভালো স্ত্রী’ কিংবা ‘ভালো মা’ হওয়ার চাপে অনেক সময় নিজেদের চাওয়া-পাওয়াকে দমন করতে হয়। এই অবদমন ধীরে ধীরে মানসিক চাপ ও হতাশায় রূপ নেয়।

৩. সহিংসতা ও হয়রানির অভিজ্ঞতা

নারীরা অনেক বেশি পারিবারিক সহিংসতা, যৌন হয়রানি ও সামাজিক নির্যাতনের শিকার হন। এসব ঘটনা তাদের আত্মবিশ্বাস ও মানসিক নিরাপত্তা নষ্ট করে দেয়, যা বিষণ্নতার গভীর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

৪. আবেগ প্রকাশে বাধা ও সামাজিক অবহেলা

মেয়েরা তাদের কষ্ট বা অনুভূতি প্রকাশ করলেও তা অনেক সময় গুরুত্ব পায় না। অনেকেই তাদের ‘অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ’ বলে অবজ্ঞা করেন। এতে করে আবেগ জমে থাকতে থাকে, জন্ম নেয় এক ধরনের নিঃসঙ্গতা ও হতাশা।

৫. আত্মপরিচয় ও আত্মমর্যাদার সংকট

বিশেষ করে কিশোরী ও তরুণীদের ক্ষেত্রে সমাজের সৌন্দর্যের মাপকাঠি, শরীর নিয়ে মন্তব্য বা তুলনার কারণে নিজেদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে। এতে আত্মসম্মানবোধে আঘাত লাগে এবং দীর্ঘমেয়াদে বিষণ্নতার ভিত্তি তৈরি হয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষণ্নতা কোনো লজ্জার বিষয় নয়। সময়মতো সহানুভূতিশীল মনোযোগ, মানসিক চিকিৎসা ও পারিবারিক সহায়তা মেয়েদের মানসিক সুস্থতায় বড় ভূমিকা রাখতে পারে।মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে খোলামেলা আলোচনা এবং সচেতনতা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।

– আশা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ