ঢাকা, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

ড. ইউনূস ও তারেক রহমান বৈঠক: সফল হওয়ার পেছনে যেসব কারণ

২০২৫ জুন ১৪ ১১:৫৩:২৩
ড. ইউনূস ও তারেক রহমান বৈঠক: সফল হওয়ার পেছনে যেসব কারণ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে লন্ডনের দ্য ডরচেস্টার হোটেলে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। প্রায় দেড় ঘণ্টা স্থায়ী এই রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে উভয় পক্ষ একে ফলপ্রসূ বলে অভিহিত করেছে।

বিএনপির উপদেষ্টা মাহদী আমিন জানান, নির্বাচনকালীন সরকার, বিচার ও প্রশাসনিক সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, এই বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক অচলাবস্থা অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে। আলোচনার পর যে সৌহার্দ্য ও আন্তরিকতা সৃষ্টি হয়েছে, তা সংকট নিরসনে সহায়ক হবে।

এই আলোচনার পেছনে কয়েকটি বিষয় সফলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রথমত, দুই পক্ষের মধ্যেই সমঝোতার ইচ্ছা ছিল স্পষ্ট। কেউ কাউকে দোষারোপ না করে আগামী দিনের পথ খোঁজার দিকেই মনোযোগী ছিলেন।দ্বিতীয়ত, আলোচনায় নির্বাচনের সময়কাল নিয়ে কিছুটা স্পষ্টতা আসে। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে হতে পারে, তবে অনুকূল পরিস্থিতিতে তা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরেও আয়োজন সম্ভব।তৃতীয়ত, বৈঠকে নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান এবং তা ঘিরে সম্ভাব্য ঝুঁকিও আলোচনায় এসেছে। এনসিপিএ’র মতো ছাত্রভিত্তিক সংগঠন নিয়ে উদ্বেগ থাকলেও এবি পার্টি ও গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা এই বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন।চতুর্থত, বিএনপির পক্ষ থেকে বিরোধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান খোঁজার মনোভাব স্পষ্ট করা হয়েছে, যা রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে এগিয়ে যাওয়ার একটি সংকেত।পঞ্চমত, ড. ইউনূস নির্দিষ্ট সময় না বললেও সংস্কার ও সংলাপ এগোলে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব—এমন বার্তা দিয়েছেন, যা রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রস্তুতির সুযোগ দিচ্ছে।

বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান মনে করেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে যে অচলাবস্থা ছিল, তা অনেকটাই কাটতে শুরু করেছে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. দিলারা চৌধুরী বলেন, সব সংকট এখনও কাটেনি। তাঁর মতে, গণতন্ত্রে মতপার্থক্য থাকবেই, তবে তা সমাধানের পথ হচ্ছে আলোচনা। এই বৈঠক সেই পথচলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, দলগুলো যদি সংস্কার এবং আলোচনার প্রক্রিয়াকে আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে, তাহলে সামনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ তৈরি হবে। সেই পথ যদি এই বৈঠক দিয়ে শুরু হয়, তবে নিঃসন্দেহে এটি দেশের জন্য একটি ইতিবাচক মোড়।

– সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ