ঢাকা, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২

হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও করণীয়

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ১৪ ১৯:৩১:৫৪
হার্ট অ্যাটাক কেন হয়, লক্ষণ ও করণীয়

নিজস্ব প্রতিবেদন: বর্তমান বিশ্বে হৃদরোগ একটি ভয়াবহ স্বাস্থ্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ হার্টের সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করছেন। শুধু বয়স্করাই নয়, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, অনিয়মিত জীবনযাপন, মানসিক চাপ ও শারীরিক নিষ্ক্রিয়তার কারণে অনেক তরুণও এখন হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হচ্ছেন।

হার্ট অ্যাটাক সাধারণত তখনই হয়, যখন হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হয়। এটি ঘটে মূলত ধমনীতে চর্বি ও কোলেস্টেরল জমে যাওয়ার কারণে, যা ব্লক সৃষ্টি করে। ব্লক অপসারণ না হলে হৃৎপিণ্ডের টিস্যু অক্সিজেনের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে, এবং সেটিই হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়।

হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণ:

হৃদপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পেলে। এই রক্ত সরবরাহ করে তিনটি প্রধান করোনারি ধমনী। যেকোনো একটি বা একাধিক ধমনী আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে হার্টের সমস্যা দেখা দেয়।

* আংশিক বন্ধ থাকলে এটিকে বলা হয় অ্যাঞ্জাইনা।

* সম্পূর্ণ বন্ধ হলে সেটিই হার্ট অ্যাটাক।

কারা ঝুঁকিতে আছেন?

১. পরিবারে কারো হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস থাকলে

২. ধূমপান ও অ্যালকোহল গ্রহণ করলে

৩. অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস থাকলে

৪. উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে

৫. স্থূলতা বা অতিরিক্ত ওজন থাকলে

৬. রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি হলে

৭. নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে

৮. মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করলে

হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ:

১. বুকের মাঝখানে তীব্র ব্যথা (ভেতর থেকে অনুভব হয়)

২. ব্যথা ছড়িয়ে পড়া (বাম হাত, ঘাড়, চোয়াল, পেট)

৩. শ্বাসকষ্ট বা কাশি

৪. অতিরিক্ত ঘাম হওয়া

৫. মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

৬. বমি বমি ভাব বা বমি

৭. হঠাৎ বুক ধড়ফড় করা

তাৎক্ষণিক করণীয়:

১. রোগীকে নড়াচড়া না করিয়ে স্থির রাখুন

২. দ্রুত হাসপাতালে নিন বা জরুরি নম্বরে ফোন করুন (যেমন ৯৯৯)

৩. সিপিআর দিতে পারেন (শুধু প্রশিক্ষিত কেউ থাকলে)

৪. অ্যাসপিরিন দিলে রক্ত পাতলা হতে পারে (ডাক্তারের পরামর্শ থাকলে)

৫. নাইট্রোগ্লিসারিন থাকলে জিহ্বার নিচে দিন (যদি আগে থেকেই ব্যবহারের অনুমতি থাকে)

৬. রোগীকে কাশি দিতে বলা যেতে পারে, এতে হার্ট রেট কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে

চিকিৎসা কীভাবে হয়?

হার্ট অ্যাটাক নির্ণয়ের জন্য ইসিজি ও রক্ত পরীক্ষা করা হয়। এরপর দ্রুত ওষুধের মাধ্যমে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হয়। পাশাপাশি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা কোলেস্টেরল থাকলে সেগুলোর চিকিৎসাও করতে হয়।

জরুরি ক্ষেত্রে অ্যানজিওগ্রামের মাধ্যমে হার্টে ব্লকের অবস্থা দেখা হয়। একটি বা দুটি ব্লক হলে স্টেন্ট (রিং) পরানো যায়। যদি ব্লক বেশি হয়, তাহলে বাইপাস সার্জারি করতে হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে করণীয়:

১. স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন গড়ে তুলুন

২. নিয়মিত হাঁটা ও ব্যায়ামের অভ্যাস করুন

৩. ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করুন

৪. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন, পুষ্টিকর খাবার খান

৫. ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন

৬. নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন (বিশেষ করে পারিবারিক ইতিহাস থাকলে)

৭. মানসিক চাপ কমান, শান্ত থাকুন, উচ্চস্বরে কথা বলা বা ঝগড়া এড়িয়ে চলুন

সতর্কতা ও সচেতনতা হল হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায়। তাই নিজের ও পরিবারের সবার হৃদয় সুস্থ রাখতে এই বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে মেনে চলুন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

দেশজুড়ে ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা

দেশজুড়ে ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, সারাদেশে আবারও বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় এবং সাগরে লঘুচাপের প্রভাবে রবিবার সকাল থেকে কক্সবাজারসহ... বিস্তারিত