জেমস! নাম শুনলেই 'মীরাবাই', 'পাগলা হাওয়া'র মতো কিছু গান আজও আমার মনে অনুরণিত হয়। আমি এমন একজন রক স্টারের কথা বলছি যিনি বহু শতাব্দী ধরে 'গুরু' নামে পরিচিত। জেমস 'দশ মাস দশ দিন', 'বাবা', 'দুখিনি দুঃখ করো না', 'পদ্মা পাতার জল', 'সুন্দরিতমা', 'এক নদী যমুনা', 'হোথিও পারে'-এর মতো গান রচনা করেছিলেন, যা ক্যাসেটে জনপ্রিয় ছিল। ৯০ যুগে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। , বলাই বাহুল্য, এমন অসংখ্য গান এখনো শ্রোতাদের কাছে পুরনো হয়ে যায়নি।

জেমস তার সঙ্গীতজীবন জুড়ে অনেক নাম এবং শিরোনাম ছিল। ভক্তদের কাছে তার একটাই পরিচয়, 'গুরু'। উপমহাদেশের এই বিখ্যাত রকস্টারকে অনেকেই নগরবাউল নামেও চেনেন। তবে জেমসের আসল নাম ফারুক মাহফুজ আনাম।

১৯৬৪ সালের এই দিনে (২ অক্টোবর) জেমস পৃথিবীতে আসেন। ৫৯ বছর জীবনের পর ৬০ বছরে পা দিলেন এই গায়ক।

জেমস এখনও মঞ্চে একজন মাস্টার এবং ভক্তদের মনোযোগ কেড়েছেন। ভক্তদের সম্মানে দুহাত তুলে চেনা কথা বলতে শোনা যায় তাকে- 'আমি তোমার জনতা।'

তবে কনসার্টের বাইরে কোথাও এই 'গুরু'দের দেখা যায় না। ফেসবুকে থাকলেও খুব একটা নিয়মিত নন তিনি। তার জন্মদিনের পরিকল্পনার কথা জানা যায়নি। কিন্তু থেমে নেই তার ভক্তরা। সোশ্যাল মিডিয়ায় জেমসের গান ও ছবির মাধ্যমে ভক্তরা তাদের প্রিয় শিল্পীকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।

তবে জেমসের ফোকাস সবচেয়ে বেশি নিজের দিকে। কোথাও বের হতে তার ভালো লাগে না, এর আগেও অনেকবার গণমাধ্যমে এ কথা বলেছেন তিনি। তিনি গানের জন্য খুব উপলব্ধ। নগরবাউলের ​​খ্যাতিমান এই শিল্পী সর্বশেষ গত মে মাসে লন্ডনে গান পরিবেশন করেন।

জেমস ১৯৮০ সালে ব্যান্ড 'ফিলিংস' প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম অ্যালবাম 'স্টেশন রোড' প্রকাশিত হয় ১৯৮৭ সালে। ১৯৮৮ সালে জেমস 'অনন্যা' নামে একটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন এবং এটি সুপারহিট হয়। এরপর 'ফিলিংস'-এর পর জেমস নতুন লাইনআপে 'নগর বাউল' ব্যান্ড গঠন করেন।

দেশের সীমানা পেরিয়ে বলিউডে পৌঁছেছিলেন জেমস। ২০০৪ সালে, জেমস কলকাতার সঙ্গীত পরিচালক প্রীতমের সাথে কাজ করেন। ২০০৫ সালে বলিউডের 'গ্যাংস্টার' ছবিতে অভিনয় করেন। এরপর ২০০৬ সালে আবারও গাইলেন বলিউডের ছবি 'চল চলে'। ২০০৭ সালে 'লাইফ ইন আ মেট্রো' ছবিতে প্লেব্যাক গান করেন।

জেমস ১৯৬৪ সালে রাজশাহীর নওগাঁয় জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু বড় হয়ে চট্টগ্রামে সংগীতজীবন শুরু। যদিও সঙ্গীত জেমসের প্রিয় ছিল, তার পরিবার এটি পছন্দ করেনি। গানের প্রতি বাবার অসম্মানের কারণে তিনি অল্প বয়সেই বাড়ি ছেড়ে চলে যান।