ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২

কাশ্মীর হামলায় মোড় ঘোরানো ভিডিও, সেনা কর্মকর্তার মুখে উঠে এলো ষড়যন্ত্রের ছায়া

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৭ ২২:৫০:০৪
কাশ্মীর হামলায় মোড় ঘোরানো ভিডিও, সেনা কর্মকর্তার মুখে উঠে এলো ষড়যন্ত্রের ছায়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় যখন ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে কূটনৈতিক চাপ বাড়াচ্ছে, তখন ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তার চাঞ্চল্যকর ভিডিও বার্তা পুরো ঘটনাকে ঘুরিয়ে দিয়েছে ভিন্ন খাতে।

সিনিয়র অফিসার অশোক কুমার সম্প্রতি প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় দাবি করেন—এই হামলা বাইরের কোনো গোষ্ঠীর নয়, বরং এর পেছনে রয়েছে ভারতের অভ্যন্তরের "রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র"। ভিডিওটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই তা ভাইরাল হয়ে পড়ে, যদিও পরে দ্রুত মুছে ফেলা হয়।

২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর চালানো হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ। ভারতের পক্ষ থেকে এই হামলার দায় চাপানো হয় পাকিস্তানের ওপর। পরিণতিতে বাতিল হয় বহু পুরনো সিন্ধু পানি চুক্তি, স্থগিত হয় সীমান্ত বাণিজ্য, এবং কঠোর হয় ভিসা নীতিও। কিন্তু অশোক কুমারের ভিডিও পুরো পরিস্থিতির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।

তিনি ভিডিওতে বলেন, “এই হামলা আদৌ কোনো জঙ্গি সংগঠনের কাজ নয়। বরং এটি ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং জনমত প্রভাবিত করার কৌশল। সেনা ও মেডিকেল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে যে বিলম্ব করেছে, তা কোনো দুর্ঘটনা নয়—এ ছিল পরিকল্পনারই অংশ।”

এই ভিডিও প্রকাশের পর দেশ-বিদেশে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী একে ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “এটি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত একটি অজুহাতমাত্র।”

ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে—কাশ্মীরে যেখানে পাঁচ লক্ষাধিক সেনা মোতায়েন, সেখানে কীভাবে এমন এক প্রাণঘাতী হামলা সংঘটিত হলো? আর কেনই বা প্রধানমন্ত্রী মোদী সৌদি সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে এলেন, কিন্তু পরে নিজেই কাশ্মীর সফর বাতিল করলেন?

ঘটনাকে ‘সরকার-পরিকল্পিত’ বলে মন্তব্য করায় গ্রেফতার হয়েছেন আসামের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম ও মানবাধিকারকর্মী সায়ক ঘোষ চৌধুরী। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, “এ ধরনের মন্তব্য জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ।”

অন্যদিকে, “কাশ্মীর প্রতিরোধ যোদ্ধা” নামে একটি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করলেও, সেনা কর্মকর্তার বক্তব্যে ঘটনাটি নতুন মাত্রা পেয়েছে।

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও আসতে শুরু করেছে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস প্রধানমন্ত্রী মোদীকে সমবেদনা জানিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্যবদ্ধ অবস্থানের আহ্বান জানান।

তবুও এক বড় প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে—এই হামলা কি প্রকৃতপক্ষে এক সন্ত্রাসী তৎপরতা, না কি তা ছিল রাজনীতির নামে সাজানো এক নিষ্ঠুর কৌশল? ঘটনাপ্রবাহের পরতে পরতে জমছে ধোঁয়াশা। আর দক্ষিণ এশিয়া অপেক্ষা করছে—উত্তরের, স্বচ্ছতার, ও সত্যের।

আশা/

ট্যাগ: ভারত

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ