ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

ইউরিক অ্যাসিড থেকে কিডনি রাখার কার্যকরী টোটকা

স্বাস্থ্য ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ০২ ১৯:৫৯:৪৬
ইউরিক অ্যাসিড থেকে কিডনি রাখার কার্যকরী টোটকা

ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে জীবন হয়ে ওঠে এক চ্যালেঞ্জ। সাধের মুসুর ডাল থেকে শুরু করে জমিয়ে মাংস খাওয়াও বন্ধ হয়ে যায়। এই সমস্যায় পড়ে অনেকেই গাঁটের ব্যথা ও প্রস্রাবের সমস্যা নিয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। এবং যদি ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে না রাখা যায়, তা হলে কিডনির বিকল হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই, এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত চিকিৎসা, জীবনযাত্রায় সচেতনতা এবং কিছু প্রাকৃতিক উপাদান খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার কারণ অনেক। অধিক প্রোটিন গ্রহণ, ওজন বৃদ্ধি, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন—এই সবই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে। যখন এটি শরীরের অস্থিসন্ধি ও মূত্রনালিতে জমা হতে শুরু করে, তখন গাঁটের ব্যথা, প্রস্রাবের সমস্যা এবং কিডনিতে পাথর জমার মতো সমস্যাও দেখা দেয়। কিন্তু নিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও শরীরচর্চার মাধ্যমে এই সমস্যাটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। এই প্রক্রিয়াতে আয়ুর্বেদিক উপায়ও অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।

আয়ুর্বেদে বেশ কিছু ডিটক্স পানীয় রয়েছে, যেগুলি নিয়মিত খেলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। চলুন, জেনে নিই এসব পানীয়ের উপকারিতা এবং তৈরি করার সহজ উপায়:

১. গুলঞ্চের চা

গুলঞ্চ একটি প্রাকৃতিক ভেষজ, যা ইউরিক অ্যাসিড কমাতে সহায়ক। গুলঞ্চ গাছের পাতা ও কিছু ডাল রাতভর জলে ভিজিয়ে রেখে পরদিন সকালে গুঁড়ো করে, এক কাপ জলে ১-২ চামচ গুলঞ্চের গুঁড়ো মিশিয়ে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে পান করুন। এই চা শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে সহায়তা করে এবং ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখে।

২. ত্রিফলা চা

ত্রিফলা, যা আমলকি, হরিতকি, এবং বহেরা মিশ্রিত একটি প্রাকৃতিক আয়ুর্বেদিক উপাদান, ইউরিক অ্যাসিড কমাতে অত্যন্ত কার্যকর। ত্রিফলার গুঁড়ো এক কাপ জলে সারা রাত ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে পান করুন। alternatively, এক কাপ জলে ত্রিফলা গুঁড়ো মিশিয়ে ৫ মিনিট ফুটিয়ে পান করতে পারেন। এটি শরীরের টক্সিন দূর করার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমে সাহায্য করে।

৩. নিম-তুলসীর রস

নিম এবং তুলসী দুইটি শক্তিশালী ডিটক্স উপাদান, যা শরীরে প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে। এক মুঠো নিমপাতা এবং তুলসীপাতা ধুয়ে এক কাপ জলে ৫-৭ মিনিট ফুটিয়ে ঠান্ডা করে পান করুন। এটি ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ কমায় এবং কিডনির স্বাস্থ্য সুরক্ষিত রাখে।

৪. ধনে ভেজানো জল

ধনে ভেজানো জল শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী, বিশেষত ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য। এক চা চামচ ধনের বীজ এক গ্লাস জলে সারা রাত ভিজিয়ে রাখুন। সকালে সেই জল ছেঁকে পান করুন। এটি শরীরের হজমের ক্ষমতা বাড়ায়, কিডনির সমস্যা সমাধান করে এবং শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমায়।

এই উপাদানগুলোর নিয়মিত ব্যবহার কেবল ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেই সহায়ক নয়, বরং শরীরের অন্যান্য অনেক সমস্যা যেমন, হজম, রক্ত সঞ্চালন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও উন্নত করতে সাহায্য করে। তবে, এই প্রাকৃতিক উপায়গুলো ব্যবহারের পাশাপাশি, খাদ্যাভ্যাসে সতর্কতা অবলম্বন, পর্যাপ্ত জল পান এবং নিয়মিত শরীরচর্চাও গুরুত্বপূর্ণ।

ইউরিক অ্যাসিড সমস্যা দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে, তবে যদি আপনি নিয়মিত চিকিৎসক কর্তৃক পরামর্শ নেন এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনেন, তবে আপনি নিশ্চিতভাবেই এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ