ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

ডিভোর্স: ভাগ্য, কর্মফল না ব্যক্তিগত ব্যর্থতা

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ১০ ১৮:৩৪:২৮
ডিভোর্স: ভাগ্য, কর্মফল না ব্যক্তিগত ব্যর্থতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিয়ে—ইসলামে এক পবিত্র ও বরকতপূর্ণ বন্ধন। অথচ সময়ের পরিবর্তনে তালাক বা ডিভোর্স যেন এক সাধারণ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, যদি বিয়ে আল্লাহর পরিকল্পনার অংশ হয়, তাহলে ডিভোর্স কেন হয়? এটি কি পূর্বনির্ধারিত ভাগ্য, নাকি মানুষের কর্ম ও সিদ্ধান্তের ফল?

অনেক ইসলামি চিন্তাবিদের মতে, ডিভোর্স নিছক ভাগ্য নয়। এটি অধিকাংশ সময়েই মানুষের অবিবেচক সিদ্ধান্ত, ধর্মীয় অনুশাসন উপেক্ষা, পারিবারিক অপ্রস্তুতি এবং সমাজের নানা অসঙ্গতির ফলাফল।

প্রথমত, বহু বিয়েই ইসলামী বিধান মেনে হয় না। অভিভাবকের সম্মতি ছাড়াই বিয়ে, সাক্ষীহীন বা গোপনে সম্পাদিত বিবাহ, কিংবা বিয়ের অনুষ্ঠানে অনৈসলামিক কার্যকলাপ—এসবই বৈবাহিক জীবনের ভিত্তিকে দুর্বল করে তোলে।

দ্বিতীয়ত, হাদিসে উল্লেখ আছে, কালোজাদু বা শয়তানি প্রভাব অনেক সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ ও বিচ্ছেদ সৃষ্টি করে। এ ধরনের বিষয় বাইরের চোখে ধরা না পড়লেও ভেতরে ভেতরে সম্পর্ক নষ্ট করে দেয়।

তৃতীয়ত, দ্বীনদার জীবনচর্চার অভাব, পারস্পরিক অধিকার রক্ষায় গাফিলতি এবং একে অপরকে সম্মান না করা—এসব কারণে অনেক সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হয় না।

এছাড়া পারিবারিক চাপে অনিচ্ছাকৃত বিয়ে, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, কিংবা অপরিণত বয়সে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াও ডিভোর্স বৃদ্ধির বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে।

তবে ইসলাম সব তালাককে গুনাহ মনে করে না। বরং নির্দিষ্ট কিছু পরিস্থিতিতে তালাককে বৈধ ও প্রয়োজনীয় পথ হিসেবে অনুমোদন দিয়েছে। যখন স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সমঝোতা ও সংশোধনের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়, তখন তালাক হতে পারে এক ধরনের মুক্তির পথ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, টেকসই বৈবাহিক সম্পর্কের জন্য প্রয়োজন:

* দ্বীনদার ও নীতিবান জীবনসঙ্গী নির্বাচন,

* ইসলামি বিধান মেনে বিবাহ সম্পাদন,

* এবং দাম্পত্য জীবনে সহনশীলতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা।

তালাকের হার কমাতে হলে পারিবারিক শিক্ষার প্রসার, ধর্মীয় অনুশাসনের চর্চা এবং সচেতন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সংস্কৃতি গড়ে তোলা জরুরি।

আশা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ