সদ্য সংবাদ
ধর্ম লুকিয়ে মুসলিম নারীদের টার্গেট করছে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী চক্র

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্র ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ভারতের কিছু উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠী—বিশেষত ইসকনের কট্টর অনুসারীরা—ধর্মীয় পরিচয় গোপন করে মুসলিম নারীদের প্রেমের ফাঁদে ফেলছে এবং তাদের মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ করছে। এ কৌশল কেবল সামাজিকভাবে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে না, বরং আন্তঃধর্মীয় সম্পর্ককে ঘিরে ভয়ানক বিদ্বেষেরও জন্ম দিচ্ছে।
‘লাভ জিহাদ’—এই বিতর্কিত ও ভিত্তিহীন ধারণাটি সামনে এনে শুরুতে মুসলিম পুরুষদের বিরুদ্ধে হিন্দু নারীদের ধর্মান্তর করানোর অভিযোগ তোলে হিন্দুত্ববাদীরা। এরপর নিজেদের কর্মকাণ্ড আড়াল করতে চালু করে ‘গেরুয়া লাভ ট্র্যাপ’। এতে দেখা যায়, হিন্দু তরুণরা ইসলামিক পরিচয় লুকিয়ে মুসলিম নারীদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলে পরে তাদের বিয়ে বা ধর্ম পরিবর্তনের ফাঁদে ফেলছে।
এই চক্র শুধু সম্পর্ক গড়ে তোলায় থেমে থাকছে না। তারা মুসলিম নারীদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে ইসলাম বিদ্বেষী ও অশ্লীল কনটেন্ট ছড়াচ্ছে। উদ্দেশ্য একটাই—মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও সামাজিক বিভ্রান্তি ছড়ানো।
এ ধরনের এক জ্বলন্ত উদাহরণ আদৃতা আজাদ রীতির ঘটনা। জন্মসূত্রে মুসলিম রীতি একটি দুর্ঘটনার ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করলে চক্রটি সেই ছবি বিকৃতভাবে ব্যবহার করে। তারা অপপ্রচার চালায়—রীতি নাকি আগে হিন্দু ছিল, এবং এক মুসলিম যুবক তাকে ধর্মান্তর করে নির্যাতন করেছে। অথচ রীতি নিজেই সাফ জানিয়ে দেন, তিনি মুসলিম এবং ছবিগুলো একটি দুর্ঘটনার ফল।
চক্রটি এখানেই থামে না। তারা রীতির নামে ফেক আইডি খুলে বিভিন্ন অশ্লীল ও ইসলামবিরোধী পোস্ট ছড়ায়। রীতির স্বামীকেও টার্গেট করে তাকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দিয়ে সামাজিকভাবে হেনস্তা করা হয়।
এই উগ্র গোষ্ঠী আরও কয়েক দফা বাংলাদেশের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের তথ্য বিকৃত করে ভুয়া ‘পুরস্কার ঘোষণা’ প্রচার করে—যেখানে দাবি করা হয়, হিন্দু মেয়েদের ইসলাম ধর্মে আনলে পুরস্কার দেওয়া হবে। ভারতের কিছু মিডিয়া এবং এমনকি বাংলাদেশের একটি জাতীয় পত্রিকাও প্রমাণ ছাড়াই সেই খবর ছাপে। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করা হয়, কিন্তু এর মধ্যেই তা বিভ্রান্তি ও উত্তেজনা ছড়ায়।
২০২৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রাপ্তবয়স্ক হিন্দু নারী ও মুসলিম পুরুষ ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা মেয়েটিকে নাবালিকা বলে অপপ্রচার চালায় এবং যুবকটিকে ‘জঙ্গি’ আখ্যা দেয়। অথচ ভারতীয় সংবিধান স্পষ্টভাবে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও প্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ের অধিকার নিশ্চিত করেছে।
পরিস্থিতির ভয়াবহতা এতটাই বেড়েছে যে, ইসকন ঘনিষ্ঠ কিছু উগ্র নেতা আদালত প্রাঙ্গণেও "মোল্লাধর ধইরা ধইরা জবাই কর"—এমন হিংসাত্মক স্লোগান দিতে কুণ্ঠাবোধ করেনি।
এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, কীভাবে ধর্মীয় পরিচয়কে হাতিয়ার করে একটি চক্র পরিকল্পিতভাবে সমাজে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন কনটেন্ট ছড়িয়ে অনেক মুসলিম পরিবার সম্মানহানি ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আদৃতা আজাদ রীতির মতো নারীরা স্পষ্টভাবে সত্য বলার পরও এ চক্রের টার্গেটে পরিণত হচ্ছেন।
এই পরিস্থিতির অবসানে তিনটি পদক্ষেপ জরুরি—জনগণের সচেতনতা, সামাজিক মাধ্যমগুলোর দায়িত্বশীলতা এবং সরকারের কঠোর আইনগত হস্তক্ষেপ।
লেখক: মৃদুল ইসলাম
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- শেখ হাসিনা লন্ডনে যাচ্ছেন, যা জানা গেল প্রকৃতভাবে
- ইরানকে শক্তিশালী আঘাত করল যুক্তরাষ্ট্র!
- যে রক্তের গ্রুপে স্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি
- এমন বৃষ্টি আর কতদিন চলবে, জানালো আবহাওয়া অফিস
- নিম্নচাপের প্রভাবে ঝড়বৃষ্টির আশঙ্কা, বিপদের ঝুঁকিতে যেসব জেলা
- আবেদনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বাংলাদেশকে ভিসা দিবে ৬ দেশ!
- এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের তারিখ ঘোষণা
- কার সঙ্গে কার বিয়ে হবে—সবই কি ভাগ্যের লিখন
- ইয়েমেনে ভারতীয় নার্স প্রিয়া মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত: কী ঘটেছিল
- সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ছে, সর্বনিম্ন ৪ হাজার, সর্বোচ্চ ৭ হাজার ৮০০ টাকা
- অপারেশন সিদুর’-এ ২৫০ ভারতীয় সেনা নিহত, দাবি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমের
- দাঁত ব্রাশ করার পরও মুখে দুর্গন্ধ, জেনে নিন কার্যকর ৬টি সমাধান
- তরুণদের মধ্যেও বাড়ছে ক্যানসার: এই লক্ষণগুলো অবহেলা করলেই বিপদ
- একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ সিম ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত
- জরিপ বলছে: জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি ভোট পাবে বিএনপি