ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল: তিন মাসে ঐতিহাসিক সাফল্য

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ০৮ ১২:৩৪:০৭
পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিল: তিন মাসে ঐতিহাসিক সাফল্য

পাসপোর্ট ইস্যুর ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া বাতিল করার সিদ্ধান্তে দারুণ সুফল মিলছে। এ বছরের মার্চ থেকে মে — মাত্র তিন মাসেই ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ইস্যু করেছে রেকর্ড ৯ লাখ ৩২ হাজার ৮৬টি পাসপোর্ট। যা দেশের পাসপোর্ট সেবার ইতিহাসে এক যুগান্তকারী সাফল্য।

পূর্বে বহু আবেদন ঝুলে থাকত শুধুমাত্র পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য। সিদ্ধান্তটি কার্যকর হওয়ার আগের দিন (২১ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত ১ লাখ ৬৯ হাজার ১৩৮টি আবেদন আটকে ছিল। কিন্তু এখন সেসব আবেদনকারীর হাতেও পৌঁছে গেছে তাদের পাসপোর্ট।

অধিদপ্তরের তথ্যমতে:

মার্চে ইস্যু হয়েছে: ২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৩টি পাসপোর্ট

এপ্রিল: ৩ লাখ ২২ হাজার ১৩০টি

মে: ৩ লাখ ৫২ হাজার ৪২৪টি

অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল নূরুল আনোয়ার জানান, এখন আবেদনকারীরা নির্ধারিত সময়েই পাসপোর্ট পাচ্ছেন। পূর্বে পুলিশ রিপোর্টের জন্য যে বিলম্ব হতো, তা এখন আর নেই।

সরেজমিনে পাসপোর্ট অফিসে কথা হলে অনেকেই জানালেন, এখন আর দালাল ধরতে হয় না, পুলিশকে ঘুষ দিতে হয় না। আগে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকলেও বারবার যাচাইয়ের নামে হয়রানি হতো। অনেকে নিরুপায় হয়ে দালালের শরণাপন্ন হতেন। এখন শুধু নির্ধারিত ফি দিয়ে সহজেই পাসপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে।

একজন গ্রাহক বলেন, "দালাল ছাড়াই ১০ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট পেয়ে গেছি— এটা যেন স্বপ্ন!" তিনি আরও বলেন, "ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার সময় শুধু কিছুক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়েছি। সব কিছু এত সহজে হয়েছে যে অবিশ্বাস্য লাগছে।"

বিশিষ্ট কলামিস্ট ও ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. কুদরাত-ই খুদা বলেন, “এটি নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি বড় পদক্ষেপ।”

পাসপোর্ট অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগে পুলিশ ভেরিফিকেশন থাকায় অনেক সময় পাসপোর্ট ডেলিভারিতে বিলম্ব হতো এবং গ্রাহক অফিসকেই দায়ী করত। এখন এই ঝামেলা নেই। সুপার এক্সপ্রেস সার্ভিসে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই পাসপোর্ট সরবরাহ করা যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে একটি পরিপত্র জারি হয়, যেখানে বলা হয়— এখন থেকে পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই। আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র বা অনলাইনে যাচাইকৃত জন্মসনদই হবে পাসপোর্ট ইস্যুর ভিত্তি।

এই সিদ্ধান্তে প্রবাসী বাংলাদেশি এবং অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। আর পুনঃইস্যুর ক্ষেত্রেও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের ভিত্তিতে কাজ সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ