ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্র বহন—আইনসম্মত নাকি বিশেষ সুবিধা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ০১ ১১:১১:৪৮
আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্র বহন—আইনসম্মত নাকি বিশেষ সুবিধা

নিজস্ব প্রতিবেদক: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের ব্যাগ থেকে গুলিসহ একটি ম্যাগাজিন উদ্ধার হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোচনা। প্রশ্ন উঠেছে— তার বয়স এবং পদমর্যাদা অনুযায়ী তিনি কি আদৌ আগ্নেয়াস্ত্র বহনের যোগ্য?

গত রোববার তিনি ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশ নিতে মরক্কোর মারাকেশ শহরে যাচ্ছিলেন। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা স্ক্যানিংয়ের সময় তার ব্যাগে একটি লাইসেন্সকৃত পিস্তলের ম্যাগাজিন এবং গুলি পাওয়া যায়।

বাংলাদেশের প্রচলিত অস্ত্র আইনে বলা হয়েছে— শর্ট ব্যারেল আগ্নেয়াস্ত্রের (যেমন পিস্তল বা রিভলভার) লাইসেন্সের জন্য আবেদনের ন্যূনতম বয়স ৩০ বছর। আর লং ব্যারেল অস্ত্রের (যেমন রাইফেল বা শটগান) জন্য বয়সসীমা ২৫ বছর। অথচ আসিফ মাহমুদের বয়স ২৬, অর্থাৎ তিনি শর্ট ব্যারেল অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার সাধারণ শর্ত পূরণ করেন না।

তবে বিষয়টি এখানেই শেষ নয়। ২০১৬ সালের আগ্নেয়াস্ত্র নীতিমালার ধারা ৩২ (২) অনুযায়ী, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা কেউ হলে— যেমন মন্ত্রী, সচিব বা তাদের সমমর্যাদার— তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় বয়স ও অন্যান্য শর্ত শিথিল করা যেতে পারে।

আসিফ মাহমুদ বর্তমানে একজন উপদেষ্টা হিসেবে মন্ত্রী-সমমান দায়িত্বে রয়েছেন, যা তাকে ‘বিশেষ বিবেচনায় লাইসেন্স পাওয়ার’ যোগ্য করতে পারে।

তাছাড়া নীতিমালায় উল্লেখ আছে, যদি কোনো ব্যক্তি নিরাপত্তাজনিত হুমকির মুখে থাকেন, তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে লাইসেন্স দেওয়া যেতে পারে। আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেছেন, তার ওপর অতীতে হত্যাচেষ্টার ঘটনা ঘটেছে, যা আইনগতভাবে একটি ‘নিরাপত্তা ঝুঁকি’ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

তবে শুধু লাইসেন্স থাকলেই অস্ত্র বহন আইনসম্মত হয় না। অস্ত্রের গুলির হিসাব সংশ্লিষ্ট থানায় জানানো, অস্ত্র কোথায় রাখা হবে, কখন ব্যবহার করা যাবে— এসব বিষয়ে কঠোর নিয়ম রয়েছে। সেই নিয়মগুলো মানা হয়েছে কিনা— এখনো তা পরিষ্কার নয়।

এখন পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে।

সব মিলিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে— আসিফ মাহমুদের আগ্নেয়াস্ত্র বহন আইনগতভাবে বৈধ ছিল, না কি এটি প্রশাসনিক প্রভাব বা রাজনৈতিক সুবিধার আওতায় একটি ব্যতিক্রম?

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ