ঢাকা, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার গুঞ্জন—প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মে ২৬ ১১:৫৬:২১
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়ার গুঞ্জন—প্রেস সচিবের ব্যাখ্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম বন্দরের নিউ মোরিং কন্টেইনার টার্মিনাল (এনএমসিটি) বিদেশি কোম্পানির কাছে হস্তান্তরের গুঞ্জন ঘিরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, অতীতে আওয়ামী লীগের শাসনামলে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা হয়েছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সেগুলোরই ধারাবাহিকতা টানছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে উদ্বেগ বেড়েছে এবং প্রতিবাদের ঘটনাও ঘটছে।

এ অবস্থায় প্রেস সচিব শফিকুল আলম স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, সরকার চট্টগ্রাম বন্দর কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিচ্ছে না। বরং আন্তর্জাতিক মানের পরিচালন দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে বিদেশি বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা নিতে আগ্রহী।

রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব বলেন, “আমরা চাই বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বন্দরের আধুনিকায়নে বিনিয়োগ করে এবং দক্ষতা উন্নয়নে অংশ নেয়। ইতোমধ্যে প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গেছে।”

এর আগে, ১৪ মে বন্দরের ওই টার্মিনাল পরিদর্শনে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস বলেন, “যারা অভিজ্ঞ, তাদের মাধ্যমেই বন্দরের ব্যবস্থাপনা চালাতে হবে। জনগণকে বোঝানোর মাধ্যমেই এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”

এই বক্তব্যের পরেই বিষয়টি আরও বিতর্কিত হয়ে ওঠে। প্রশ্ন তোলা হয়—১৭ বছর ধরে সফলভাবে পরিচালিত টার্মিনালটি হঠাৎ বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে কেন দেওয়া হবে? ১২ দলীয় জোট এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত বছর দেশীয় অপারেটররা ওই টার্মিনালেই প্রায় ১২ লাখ ৮১ হাজার কন্টেইনার পরিচালনা করেছে। তাহলে এর পেছনে আসল উদ্দেশ্য কী?

এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান ২১ মে মন্তব্য করেন, জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট এমন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধু একটি নির্বাচিত সরকারেরই আছে, অন্তর্বর্তী সরকারের নয়। একইসঙ্গে বিএনপিসহ একাধিক রাজনৈতিক দল এই উদ্যোগের বিরোধিতা করেছে।

প্রেস সচিব আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি গতিশীল করতে বন্দর ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও দক্ষ করতে হবে। “আমাদের এখনও পোর্ট ম্যানেজমেন্টে যে ধরনের প্রযুক্তি ও সক্ষমতা দরকার, তা পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। এজন্য দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড, মার্স্ক এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটির মতো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা চলছে,” বলেন তিনি।

তিনি যোগ করেন, বিদেশি কোম্পানিকে বন্দরের মালিকানা দেওয়া সরকারের উদ্দেশ্য নয়, বরং আধুনিক ব্যবস্থাপনায় তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণ করাই মূল লক্ষ্য।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ