ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পথে আরেক মুসলিম দেশ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২৬ ১০:০৪:০৮
যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির পথে আরেক মুসলিম দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদন: বিশ্ব রাজনীতিতে নতুন এক উত্তেজনার আঁচ মিলেছে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক পারমাণবিক কর্মসূচি ঘিরে। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি, ইসলামাবাদ এমন একটি দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী সাময়িকী ফরেন অ্যাফেয়ার্স।

পাকিস্তান বরাবরই তার পারমাণবিক শক্তিকে ভারতের সামরিক আধিপত্যের পাল্টা হিসেবে ব্যাখ্যা করে। কিন্তু এবার যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা মহল আশঙ্কা করছে, ইসলামাবাদের লক্ষ্য হয়তো কেবল দিল্লি নয়, বরং আরও বড় পরিসরে—বিশ্ব কৌশলগত নিরাপত্তা কাঠামোর ওপর প্রভাব ফেলাই আসল উদ্দেশ্য।

প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, পাকিস্তান যে ধরনের আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) উন্নয়নে মনোযোগ দিচ্ছে, তা যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে। এর ফলে ইসলামাবাদ এখন আর শুধু আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী নয়, বরং এক পূর্ণাঙ্গ পারমাণবিক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে।

মার্কিন কর্মকর্তারা মনে করছেন, পাকিস্তানের এই পদক্ষেপ শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি তৈরি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইসলামাবাদ পরোক্ষভাবে বার্তা দিচ্ছে: যদি যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের পারমাণবিক স্থাপনায় আগাম হামলার চেষ্টা করে, তবে তার প্রতিক্রিয়া হতে পারে ভয়াবহ।

১৯৭৪ সালে ভারতের পরমাণু পরীক্ষার পর থেকেই পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি গতিশীল করে তোলে। ১৯৯৮ সালে ছয়টি সফল পারমাণবিক বিস্ফোরণের মাধ্যমে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে দেশটির কাছে প্রায় ১৬৫টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে কৌশলগত বোমা ও স্বল্প-মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, যা দ্রুত ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় রাখা হয়েছে।

পাকিস্তান এখনও পর্যন্ত পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ ও বিস্ফোরণ নিষেধ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক চুক্তিতে সই করেনি। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, এটি ‘জাতীয় সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা’র সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বিষয়টিকে দেখছেন ভিন্ন চোখে—তাদের মতে, এই অবস্থান বিশ্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এক দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ।

প্রতিবেদন বলছে, যখন চীন তাদের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার দ্রুত বাড়াচ্ছে এবং রাশিয়া অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিকে উপেক্ষা করছে, তখন পাকিস্তানের এই নতুন গতিপথ যুক্তরাষ্ট্রকে একইসঙ্গে চীন, রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া এবং এখন পাকিস্তানের মতো চারটি পারমাণবিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানের এই উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ শুধু দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতি নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ভারসাম্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। ইসলামাবাদের আচরণ ভবিষ্যতের ভূরাজনৈতিক সমীকরণে বড় পরিবর্তন ডেকে আনতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত