ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

যাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

২০২৫ জুন ২১ ১১:২৬:১৬
যাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক: লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) সভাপতি এবং সাবেক সেনাকর্মকর্তা কর্নেল (অব.) ড. অলি আহমদ দাবি করেছেন, তাকে একাধিকবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

সম্প্রতি একটি জনপ্রিয় টকশোতে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালে বিএনপি সরকারবিরোধী কেয়ারটেকার সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যখন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হয়, তখন তিনি ছিলেন যোগাযোগমন্ত্রী। সেই সময় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তাকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

অলি আহমদের ভাষায়, শেখ হাসিনা তার চাচা হাফিজ এবং আওয়ামী লীগ নেতা আ. খ. ম জাহাঙ্গীর কবীরকে তার বাসায় পাঠিয়েছিলেন। তারা জানান, সংসদে একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সরিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের ১৪৩ জন ও বিএনপির ৪০ জন এমপির সমর্থনে তাকে প্রধানমন্ত্রী করা হবে।

তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিন দিন ধরে আলোচনা চলে। প্রথমে তিনি সম্মত হলেও, শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পাল্টান। তিনি জানান, "আমি ভেবেছিলাম, বেগম জিয়া আমাকে মন্ত্রী করেছেন, তার সঙ্গে বেঈমানি করা উচিত হবে না। আমি জায়নামাজে বসে আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং এরপর শেখ হাসিনাকে জানাই, আমি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছি না।"

তিনি আরও জানান, ওই সিদ্ধান্ত জানাতে তাকে সেদিন রাত দেড়টার দিকে আবার শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে বলা হয়। সাক্ষাতে তিনি তাকে বলেন, "আপনি আমাকে যোগ্য মনে করেছেন, এজন্য কৃতজ্ঞ। তবে আমি আমার দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতে পারি না। তাই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিচ্ছি।"

এলডিপি সভাপতি দাবি করেন, শুধু ১৯৯৫ সালেই নয়, পরবর্তীতেও তাকে নানা সময় প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, ২০১৪ সালে তাকে মন্ত্রিত্ব, দুটি আসন এবং বড় অঙ্কের আর্থিক সুবিধার প্রলোভন দেখানো হয়। একই রকম প্রস্তাব আসে ২০১৮ সালেও। কিন্তু প্রতিবারই তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

"অনেকে হয়তো একবার প্রস্তাবেই রাজি হয়ে যান, কিন্তু আমি কখনো কোনো লোভে পড়িনি,"— বলেন অলি আহমদ।

প্রসঙ্গত, কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন গেরিলা সংগঠনের অন্যতম সংগঠক ছিলেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ঘনিষ্ঠ এই রাজনৈতিক নেতা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের পর তিনি বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে যুক্ত হন। পরে নিজেই এলডিপি গঠন করেন।

গত এক যুগ ধরে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী রাজনৈতিক জোটের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামেও সক্রিয় ছিলেন অলি আহমদ।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ