ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

অবশেষে নির্বাচন ঘোষণা: কী বলছে বিএনপি

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ০৭ ০৮:২৪:২৩
অবশেষে নির্বাচন ঘোষণা: কী বলছে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনীতিতে আবারও উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানান, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথম ভাগে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

তবে এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে মতবিরোধ। বিএনপি আগেই দাবি করেছিল, নির্বাচন হতে হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পরও দলটি তাদের অবস্থানে অটল রয়েছে।

ভাষণের পরপরই বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে বিএনপি জানায়, নির্বাচন বিলম্বিত হওয়ায় জনগণ হতাশ ও ক্ষুব্ধ। রমজান, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা এবং বৈরী আবহাওয়ার বাস্তবতা বিবেচনায়, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হওয়া উচিত ছিল।

বিএনপির বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্যে নির্বাচন পেছানোর কোনো যুক্তিসঙ্গত ব্যাখ্যা ছিল না। বরং বন্দর ও কোরিডর ইস্যু এনে রাজনৈতিক শালীনতার সীমা অতিক্রম করা হয়েছে বলে দলটির অভিযোগ। তাদের মতে, এই ভাষণ সংকট নিরসনের বদলে নতুন করে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে। তারা জানিয়েছে, যদি জুলাই সনদ এবং রাজনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের একটি সুস্পষ্ট পরিকল্পনা দেওয়া হয়, তাহলে তারা এপ্রিলেই নির্বাচনের পক্ষে থাকবে।

জামায়াতে ইসলামিও প্রায় একই ধরনের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। দলের আমির শফিকুর রহমান বলেন, এই ভাষণ জাতিকে আশ্বস্ত করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি সুবিধা পাবে এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামি। এনসিপি-র মতো নতুন দলের জন্য অতিরিক্ত সময় রাজনৈতিক প্রস্তুতির সুযোগ এনে দেবে, আর জামায়াত অতীত বিতর্কের বাইরে এসে নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করতে পারবে।

তবে রাজনৈতিক পরিবেশে জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন আরও স্পষ্ট হচ্ছে। বিএনপি ও তাদের মিত্ররা যেখানে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায়, সেখানে এনসিপি ও জামায়াত সময় বাড়ানোর পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে।

এখন জাতীয় রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে— নির্বাচন কয়েক মাস পিছিয়ে দিলে তা কি দেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে, নাকি আরও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করবে? সামনে সরকারের পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিক্রিয়াই আগামী দিনের দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে।

আশা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ