ঢাকা, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

বজ্রপাত কি আল্লাহর আযাব, না ফেরেশতার কণ্ঠস্বর

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ০৩ ১৫:৩০:০০
বজ্রপাত কি আল্লাহর আযাব, না ফেরেশতার কণ্ঠস্বর

নিজস্ব প্রতিবেদক: বজ্রপাত প্রকৃতির এক বিস্ময়কর ও অনেক সময় ভীতিকর দৃশ্য। অনেকেই জানতে চান—এই বজ্রধ্বনি কি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোনো আযাব, নাকি এটি ফেরেশতাদের কোনো কাজ? ইসলামি হাদিস ও কুরআনের আলোকে এই বিষয়টি নিয়ে রয়েছে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা।

ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রহ.)-সহ অনেক মুফাসসির কুরআন ও হাদিস থেকে জানিয়েছেন, বজ্রপাত হলো ফেরেশতাদের আওয়াজ। একাধিক হাদিসে বলা হয়েছে, আল্লাহ তাআলা এমন এক বিশেষ ফেরেশতার মাধ্যমে মেঘ ও বজ্রের কাজ পরিচালনা করেন। সেই ফেরেশতার কণ্ঠ থেকেই নির্গত হয় বজ্রের গর্জন।

কুরআনের সূরা রা'দ-এ বলা হয়েছে:“আর বজ্র তাঁর (আল্লাহর) প্রশংসা সহকারে তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করে এবং ফেরেশতারাও তা করে তাঁর ভয়ে।” (সূরা রা’দ, আয়াত ১৩)

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, বজ্রের শব্দ শুধু প্রাকৃতিক শব্দ নয়, বরং তা একধরনের ‘তাসবিহ’, যা আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা বর্ণনা করে। ফেরেশতারা ভয় ও শ্রদ্ধার সঙ্গে এই শব্দ উচ্চারণ করেন।

বিশিষ্ট সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে জুবায়ের (রাযি.) বজ্রপাতের শব্দ শুনলে কথা বলা বন্ধ করে দিতেন এবং একটি দোয়া পাঠ করতেন:

"سُبْحَانَ الَّذِي يُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ"

উচ্চারণ: সুবহানাল্লাযী ইউসাব্বিহুর রা‘দু বিহামদিহি ওয়াল মালায়িকাতু মিন খীফাতিহি।

অর্থ: “পবিত্র সেই আল্লাহ, যাঁর প্রশংসা করে বজ্র, আর ফেরেশতারা তাঁকে ভয় করে।”

এই দোয়া এবং কুরআনিক ব্যাখ্যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বজ্রপাত সরাসরি আযাব নয়। এটি আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন এবং ফেরেশতার মাধ্যমে উচ্চারিত তাঁর পবিত্রতার ঘোষণা।

তবে, অনেক সময় বজ্রপাত বড় কোনো বিপর্যয়ের কারণ হলে কেউ কেউ একে সতর্কবার্তা বা আল্লাহর গজবের পূর্বাভাস হিসেবেও বিবেচনা করে থাকেন। কিন্তু মূলত এটি আল্লাহর একটি নির্ধারিত প্রাকৃতিক নিয়ম ও সৃষ্টি।

অতএব, বজ্রপাতকে দেখা উচিত আল্লাহর মহিমা, কুদরত এবং ফেরেশতাদের কর্মকাণ্ড হিসেবে—যা আমাদের ঈমানকে আরও দৃঢ় করে।

সিদ্দিকা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ