ঢাকা, শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২

মানবিক করিডোর না, এটা ভারতের সামরিক করিডোর

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মে ১৯ ২১:০৯:৩০
মানবিক করিডোর না, এটা ভারতের সামরিক করিডোর

নিজস্ব প্রতিবেদক: রোহিঙ্গা সংকটকে দীর্ঘদিন ধরে মানবিক ইস্যু হিসেবে উপস্থাপন করা হলেও, এর আড়ালে রয়েছে একটি গভীর ভূ-রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র। বিশেষ করে ভারত ও মিয়ানমারের যৌথ প্রকল্প ‘কালাদান মাল্টিমোডাল ট্রানজিট ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্ট’ (KMTTTP)—যেটি এখন শুধু উন্নয়ন প্রকল্প নয়, বরং একটি সামরিক করিডোর বাস্তবায়নের কৌশল হিসেবেই সামনে আসছে।

এই প্রকল্পের লক্ষ্য, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে বিকল্প পথে যুক্ত করা। রাখাইন রাজ্যের সিত্তে বন্দর থেকে মিজোরাম পর্যন্ত নদীপথ ও সড়কপথে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। কিন্তু সমস্যা হলো—এই রুটের পাশেই ছিল রোহিঙ্গা মুসলমানদের ঐতিহাসিক বসতি। ফলে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য তাদের উচ্ছেদ ছিল পূর্বপরিকল্পিত।

রোহিঙ্গাদের জমি দখল করতে, তাদের গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়, চালানো হয় ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতন। এই জবরদখলের পেছনে ‘উন্নয়ন’ ছিল একটি মুখোশ মাত্র। বাস্তবে, এটি ছিল একটি জাতিগত নির্মূল অভিযান। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ একাধিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এর বিরুদ্ধে কথা বললেও ভারত শুরু থেকেই মিয়ানমারের পাশে থেকেছে। এমনকি জাতিসংঘে রোহিঙ্গা নিধনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবে ভারত ভোট দেওয়া থেকেও বিরত থাকে।

ভারতের উদ্দেশ্য খুব পরিষ্কার—রোহিঙ্গারা যেন আর ফিরে না আসে। কারণ তারা ফিরে এলে তাদের জমি ফেরতের দাবি উঠবে, যা ভারতের কৌশলগত প্রকল্পের পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। আর এই বাস্তবতাকে ঢাকতেই এখন ভারত 'মানবিক করিডোর' নামক একটি নতুন প্রচারণা শুরু করেছে—যেটি আসলে সামরিক প্রভাব বিস্তারের একটি চালাকিপূর্ণ প্রচেষ্টা।

বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী এই 'মানবিক করিডোর'কে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। অথচ বাস্তবতা হলো—এই করিডোর দিয়ে ভারত ট্রানজিট সুবিধা নেবে, রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাবে না, বরং সীমান্ত এলাকায় নিজের সামরিক উপস্থিতি শক্ত করবে।

এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী, জনগণের ভোটে নির্বাচিত ও জাতীয় স্বার্থে আপসহীন নেতৃত্ব। প্রয়োজন এমন সরকার, যারা বিদেশি চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না এবং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় অটল থাকবে।

বাংলাদেশ কোনো করিডোর নয়—এটি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র।

পড়ুন, ভাবুন, শেয়ার করুন—সতর্ক থাকুন, সচেতন থাকুন।

আশা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ