ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

মোদি সরকারের রাজনীতির ফাঁদে নিরপরাধ হিন্দুরা

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৫ ১৭:০২:২৪
মোদি সরকারের রাজনীতির ফাঁদে নিরপরাধ হিন্দুরা

নিজস্ব প্রতিবেদন: সম্প্রতি কাশ্মীরের একটি সন্ত্রাসী হামলার পর ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি দম্পতির ছবি ভাইরাল হয়। দাবি করা হয়, তাঁরা নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা ও তাঁর স্ত্রী, যাঁরা ওই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন। কিন্তু কিছুদিন পর সেই দম্পতি নিজেরাই একটি ভিডিওবার্তায় জানিয়ে দেন—“আমরা জীবিত, আমাদের ছবি ব্যবহার করে মিথ্যা খবর ছড়ানো হচ্ছে।”

এই ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠতে শুরু করে ভারতের কিছু সংবাদমাধ্যমের নিরপেক্ষতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে। কারণ, যে ছবি ব্যবহার করা হয়েছিল তা এক মাস আগেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়েছিল। কিন্তু সেটিকেই সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষিতে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়। এটাই স্পষ্ট করে যে, মিডিয়ার একাংশ ইচ্ছাকৃতভাবে জনগণকে ভুল তথ্য দিচ্ছে।

কাশ্মীরের হামলা ঘিরে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হয়েছে। তবে অনেকেই সন্দেহ করছেন, এই হামলার পেছনে রয়েছে মোদি সরকারের রাজনৈতিক পরিকল্পনা। কাশ্মীরে কর্মরত এক সেনা সদস্য ভিডিওবার্তায় জানান, হামলার সময় সেনাবাহিনীর তৎপরতা ছিল অত্যন্ত সীমিত, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে মনে হয়েছে তাঁর কাছে।

আরেকটি বড় প্রশ্ন উঠেছে—কাশ্মীরের মতো নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকায়, যেখানে ছয় লাখের বেশি সেনা মোতায়েন রয়েছে এবং প্রতি ৫০ মিটার অন্তর নিরাপত্তা বাহিনী অবস্থান নেয়, সেখানে এত বড় হামলা কীভাবে সম্ভব হলো?

পশ্চিমবঙ্গ ডিজিটাল মিডিয়া ফেডারেশনের সভাপতি দীপক ব্যাপারী তাঁর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, “জঙ্গিরা কীভাবে জানলো, সেই মুহূর্তে সেনা উপস্থিত থাকবে না? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কেন হঠাৎ করে ১৯ এপ্রিলের কাশ্মীর সফর বাতিল করলেন? তিনি কি আগে থেকেই কিছু জানতেন না?”

আসামের বিধায়ক এবং অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের নেতা আমিনুল ইসলামও অভিযোগ করেন, পেহেলগাম হামলা এবং ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলা—উভয়ই ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের গভীর ষড়যন্ত্র। এই মন্তব্যের কারণে তাঁকে গ্রেফতারও করা হয়।

ভারতের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, কোনো সন্ত্রাসী হামলার পরই একতরফাভাবে মুসলিমদের দায়ী করার প্রবণতা বাড়ছে। অথচ পেহেলগামে নিহত ঝান্ডু আলি শেখ ছিলেন একজন মুসলিম জওয়ান, যিনি সন্ত্রাসীদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে শহীদ হন। আর সৈয়েদ আদিল হোসেন শাহ, একজন মুসলিম ঘোড়াচালক, যিনি হামলার সময় পর্যটকদের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজে গুলিবিদ্ধ হন।

তবুও কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করে, এই হামলা ছিল শুধুমাত্র হিন্দুদের লক্ষ্য করে। অথচ আদিল ও ঝান্ডুর আত্মত্যাগ প্রমাণ করে দেয়, এই ধরনের প্রচার কতটা বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ