সদ্য সংবাদ
ড. ইউনূস কেন মোদির নিদ্রাহরণ করছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: নয়াদিল্লির প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে দুপুরের রোদ ছড়াচ্ছে ঝলক। মোদি দুপুরের পনির-রুটি আর ডাল শেষ করলেও ঘুম যেন চোখে আসতে চাইছে না। চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলেই ভেসে ওঠে এক পরিচিত মুখ—শেখ হাসিনা।
দীর্ঘদিন ধরে যিনি ভারতের সবচেয়ে "নির্ভরযোগ্য" প্রতিবেশী নেতা। ভারতের স্বার্থে বারবার নিজের দেশের জনমতকে উপেক্ষা করে যিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মোদির কাছে শেখ হাসিনা মানে ছিল দক্ষিণ সীমান্তে এক নিশ্চিন্ত আস্থার নাম। কিন্তু হাওয়া বদলেছে। সেই নির্ভরতার জায়গায় এখন এক নতুন নাম—ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
যিনি একসময় পরিচিত ছিলেন ক্ষুদ্রঋণের পথিকৃত, নোবেলজয়ী এক শান্ত মানুষ হিসেবে—আজ তিনিই হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক আবহে এক অপ্রতিরোধ্য কণ্ঠস্বর।
মোদির ভয়টাই সত্যি হলো। তিনি জানতেন, ইউনূস রাজনীতিতে এলে তিনি "চুপ থাকবেন না"—আর সেটাই হয়েছে। ইউনূস যেন ছক ভেঙে ফেলেছেন। তিনি শেখ হাসিনা নন, যিনি দিল্লির কথায় মাথা নোয়ান। তিনি নিজের ছন্দে এগোচ্ছেন, আর একের পর এক চাল দিয়ে যাচ্ছেন—ভারতের কূটনৈতিক দাবার বোর্ডে।
ড. ইউনূসের কৌশলিক পদক্ষেপগুলো একের পর এক চাপে ফেলছে ভারতকে— - পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উষ্ণ করার বার্তা - চীনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বাড়ানো - যুক্তরাষ্ট্রকে কৌশলগতভাবে কাছে টানা - সৌদি আরবকে অর্থনৈতিক বিনিয়োগে যুক্ত করা
এসব মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ আর কারও ছায়াতলে নয়, বরং একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ কূটনৈতিক ব্যালান্সিংয়ের কেন্দ্রে।
বিগত ১৫ বছর বাংলাদেশ ছিল ভারতের ছায়ায়। তিস্তার পানি না পাওয়া, সীমান্তে হত্যা, এনআরসি আতঙ্ক—সবকিছুতে শেখ হাসিনা মুখ বুজে সহ্য করে গেছেন। সেই নীরবতা আজ বিদ্রোহে রূপ নিয়েছে, আর সেই শূন্যতায় জায়গা নিয়েছেন একজন অধ্যাপক—ড. ইউনূস।
তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলাদেশ এখন 'একপাক্ষিক বন্ধুত্বের' সময় পেরিয়ে এসেছে। ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলে বাংলাদেশ এখন নিজেই এক শক্ত অবস্থান তৈরি করছে।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ রিপোর্ট বলছে, বাংলাদেশের ৭০% অস্ত্র এখন আসে চীন থেকে—যার মধ্যে রয়েছে যুদ্ধজাহাজ, রাডার, মিসাইল সিস্টেম। ভারত মহাসাগরে এ এক নতুন প্রতিপক্ষের আগমন, যার নেতৃত্বে ইউনূসের কূটনৈতিক চিন্তাভাবনা।
ইতিহাসের ঘরে এক বড় ধাক্কা দিয়েছেন ড. ইউনূস—১৯৭১ সালের গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা ও ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে। ইসলামাবাদ যদি ক্ষমা চায়, তাহলে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হবে—এটাই ভারতের মাথাব্যথার বড় কারণ।
আজ শেখ হাসিনা অতীত, আর সামনে যিনি উঠে এসেছেন, তিনি শুধু একজন অর্থনীতিবিদ নন—তিনি এখন দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক থ্রিলারের নায়ক। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপ এখন পরিণত হচ্ছে ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জে।