শেখ হাসিনার নির্দেশে আয়নাঘরে বন্দি রাখা হতো: প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ঘুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের প্রধান, বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে অনেক মানুষকে আয়নাঘরে বন্দি করে রাখা হতো। তিনি আরও জানান, যারা ঘুমের সঙ্গে যুক্ত, তাদের নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।

কমিশন জানায়, বিভিন্ন জেলা শহরের পুলিশ লাইন্সে আয়নাঘর থাকার তথ্য উঠে এসেছে। মহিবুল্লাহ মুহিবের রিপোর্টে জুলাইয়ের অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর গুমের শিকার মানুষদের আটকিয়ে নির্যাতন চালানোর বিষয়ে গুরুতর অভিযোগ তোলা হয়েছে। সে সময়, সেনা ক্যাম্পগুলো পরিচিতি পায় আয়নাঘরের নাম দিয়ে, যেখানে নির্যাতন চালানো হতো।

২০১৯ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর গুম কমিশন গঠনের পর, সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই, র‍্যাব এবং পুলিশ পরিদর্শন করে এবং বন্দিশালাগুলোর আলামত ধ্বংস করার চেষ্টা করেছিল।

বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, "শেখ হাসিনার নির্দেশে এসব বন্দিশালায় বন্দি রাখা হতো মানুষ। কমিশন গঠনের পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ডিজিএফআই ও র‍্যাব বিভিন্ন গোপন বন্দিশালা পরিদর্শন করে এবং সেগুলোর ধ্বংস করার প্রক্রিয়া বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।"

তিনি আরও জানান, ঢাকা, বগুড়া, নারায়ণগঞ্জ, রাজশাহী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলা শহরে ডিজিএফআই, সিটিটিসি ও র‍্যাবের নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু গোপন বন্দিশালার সন্ধান পাওয়া গেছে। কমিশন সেগুলো পরিদর্শন করেছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।

বিচারপতি আরও বলেন, "ঘুমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হলে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি উন্নত হবে।" তিনি উল্লেখ করেন, "এমনকি পুলিশ লাইন্সে যে গোপন বন্দিশালা পাওয়া গেছে, তা একেবারেই অবিশ্বাস্য। আমরা বগুড়ায় এমন একটি জায়গা পেয়েছি, যেখানে পুলিশ লাইনের ভিতরেই গোপন কারাগার তৈরি করা হয়েছে।"

কমিশন ইতোমধ্যে ১৭৫২টি অভিযোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে ১০০০টির প্রাথমিক যাচাই করা হয়েছে। এছাড়া ২৮০ জন অভিযোগকারী এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৪৫ কর্মকর্তার বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। কমিশন এখনো ৩৩০ জন গুমের শিকার ব্যক্তির বিষয়ে অনুসন্ধান করছে, যারা ফিরে আসেননি।

সোহাগ/