ঢাকা, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২

হাসান

রিপোর্টার

৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে হাদি হ’ত্যার পরিকল্পনা, তদন্তে বেড়িয়ে এল আঁতকে উঠার মতো তথ্য

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৮ ০১:২৮:৪৬
৬ মাসেরও বেশি সময় ধরে হাদি হ’ত্যার পরিকল্পনা, তদন্তে বেড়িয়ে এল আঁতকে উঠার মতো তথ্য

হাসান: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো তাৎক্ষণিক ঘটনা ছিল না; বরং দীর্ঘ ছয় মাসের সুনিপুণ পরিকল্পনার ফসল ছিল এই নৃশংস কিলিং মিশন। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দাবি, এই হত্যাকাণ্ডের সুতা বাঁধা ছিল দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সুদূর সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া সীমান্তে। দেশি-বিদেশি কয়েকটি প্রভাবশালী মহলের সমন্বয়ে এই খুনের নীল-নকশা তৈরি করা হয়েছিল।

সিঙ্গাপুর সফর ও রহস্যময় বৈঠকতদন্ত সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকাণ্ডের মূল শুটার ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ গত ২১ জুলাই আইটি উদ্যোক্তা পরিচয়ে সিঙ্গাপুরে পাড়ি জমান। সেখানে অবস্থানকালে তিনি কয়েকজন পলাতক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন। এমনকি মালয়েশিয়া সীমান্তে গিয়েও প্রভাবশালী এক মহলের সঙ্গে চূড়ান্ত পরিকল্পনা সাজান বলে তথ্য মিলেছে। ২৬ জুলাই দেশে ফেরার আগেই হাদিকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার ছক চূড়ান্ত করে ফেলেন ফয়সাল।

"দেশ কাঁপিয়ে দেওয়ার" বার্তা ও শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতদন্তে ফয়সালের ব্যক্তিগত জীবনের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে। হত্যার আগের রাতে সাভারের মধুমতি মডেল টাউনে ফয়সাল, মোটরবাইক চালক আলমগীর ও প্রেমিকা মারিয়া আক্তার সময় কাটান। সেখানেই মারিয়াকে ফয়সাল বলেছিলেন, "আগামীকাল এমন কিছু হবে যা পুরো দেশ কাঁপিয়ে দেবে।" এর আগে নিজের স্ত্রীকে ৩০ লাখ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্টের হদিস দিয়ে দেশ ত্যাগের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি। গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ফয়সালের ভ্রমণ বৃত্তান্ত ধরে তদন্তের জাল আরও বিস্তৃত করা হচ্ছে।

পলায়নে রাজনৈতিক মদদ ও বর্তমান পরিস্থিতিগত ১২ ডিসেম্বর পল্টনে হাদির মাথায় গুলি করার পর ঘাতক ফয়সাল ও আলমগীরকে সীমান্ত পাড়ি দিতে সরাসরি সহায়তা করেন সাবেক কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী। দালালের মাধ্যমে হালুয়াঘাট সীমান্ত দিয়ে তারা ভারতে প্রবেশ করে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ডিবি ও র‍্যাব ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে।

অন্যদিকে, হাদি হত্যার বিচার দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছে শাহবাগ। ইনকিলাব মঞ্চ গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর বড় ধরনের বিক্ষোভ মিছিল করে এবং শাহবাগ মোড়কে ‘শহীদ ওসমান হাদি চত্বর’ হিসেবে ঘোষণা দেয়।

উল্লেখ্য, গত ১৫ ডিসেম্বর মুমূর্ষু অবস্থায় সিঙ্গাপুরে নেওয়ার পর ১৮ ডিসেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান হাদি। তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে সমাহিত করা হয়েছে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ