ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ৯ পৌষ ১৪৩২

হাসান

রিপোর্টার

পে স্কেল চূড়ান্ত? যা যা রয়েছে রিপোর্টে দেখুন এক নজরে

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ডিসেম্বর ২৩ ১৬:২৬:৩০
পে স্কেল চূড়ান্ত? যা যা রয়েছে রিপোর্টে দেখুন এক নজরে

হাসান: সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটাতে যাচ্ছে নবম জাতীয় বেতন কাঠামো। জাতীয় বেতন কমিশন ইতোমধ্যে তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে, যা ২০২৬ সালের জানুয়ারি মাসে সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে জমা দেওয়া হবে। প্রস্তাবিত এই পে স্কেলে ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলেছে, যার প্রধান লক্ষ্য দীর্ঘদিনের বেতন বৈষম্য হ্রাস এবং বাস্তব জীবনের ব্যয়চাপের সঙ্গে সামঞ্জস্য আনা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এবারের বেতন কাঠামো কেবল সংখ্যাগত পরিবর্তন নয়, বরং এটি সরকারি চাকরি ব্যবস্থার একটি কাঠামোগত সংস্কারের দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।

নবম পে স্কেলের প্রধান বৈশিষ্ট্য

ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন:

প্রস্তাবিত নবম পে স্কেল একবারে নয়, মোট ৩টি ধাপে কার্যকর করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

গ্রেড কাঠামোয় বড় পরিবর্তন:বর্তমানে চালু থাকা ২০টি গ্রেড কমিয়ে ১৩টি গ্রেডে নামিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে, যা বেতন কাঠামোকে আরও সংক্ষিপ্ত ও কার্যকর করবে।

সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মূল বেতন:নতুন কাঠামো অনুযায়ী সর্বনিম্ন মূল বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩২,০০০ টাকা, আর সর্বোচ্চ মূল বেতন ১,২৮,০০০ টাকা।

বেতন বৃদ্ধির হার:গত এক দশকের মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় বেতন ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত গ্রেডভিত্তিক বেতন (নমুনা)

গ্রেড–২ : ১,২৭,৪২৬ টাকা

গ্রেড–৫ : ৮৩,০২০ টাকা

গ্রেড–১০ : ৩০,৮৯১ টাকা

গ্রেড–২০ : ১৫,৯২৮ টাকা

(তবে কর্মচারী সংগঠনগুলো ২০তম গ্রেড বাতিল করে সর্বনিম্ন মূল বেতন ৩২,০০০ টাকা নির্ধারণের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।)

আন্দোলনের আল্টিমেটাম

সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ সরকারকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে গেজেট প্রকাশ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে দেশব্যাপী কঠোর কর্মসূচি ও লং মার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।এদিকে, প্রাথমিক শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডের দাবিতে এখনো অনশন ও ধরণা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন, যা পরিস্থিতিকে আরও সংবেদনশীল করে তুলেছে।

অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব

অর্থনীতিবিদদের হিসাব অনুযায়ী, নতুন পে স্কেল কার্যকর হলে সরকারের বার্ষিক ব্যয় প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা বৃদ্ধি পেতে পারে। এতে একদিকে সরকারি কর্মচারীদের ক্রয়ক্ষমতা ও জীবনমান উন্নত হবে, পাশাপাশি কর রাজস্ব বাড়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। তবে একই সঙ্গে বাজেট ঘাটতি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের শুরুতেই নবম পে স্কেল কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে প্রশাসনিক গতিশীলতা ও জনসেবার মান বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা কাটছে না।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ