সদ্য সংবাদ
পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি: কোন পথে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক; আজকের বিশ্ব যেন এক বিস্ফোরক ব্যারেলের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা, আর দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত-পাকিস্তানের পুরোনো বৈরিতা—সব মিলিয়ে বৈশ্বিক রাজনীতি এখন এক অজানা ও বিপজ্জনক মোড়ে এসে পৌঁছেছে। এই অস্থিরতায় বাংলাদেশের সামনে একটি গভীর প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে: নিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে কি ঢাকা-কেও পরমাণু শক্তির পথে পা বাড়াতে হবে?
পারমাণবিক অস্ত্র শুধু ধ্বংস নয়, এটি শক্তির প্রতীক
পরমাণু অস্ত্র কেবল ধ্বংসযন্ত্র নয়, বরং তা একটি দেশের প্রতিরক্ষা, রাজনীতি ও কূটনৈতিক সক্ষমতার প্রতীক। বর্তমানে বিশ্বের মাত্র ৯টি দেশের হাতে রয়েছে এই শক্তি—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, ইসরায়েল ও উত্তর কোরিয়া। এর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠছে।
বাংলাদেশ ১৯৭৯ সালেই পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধে আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং শান্তিপূর্ণ পরমাণু প্রযুক্তি ব্যবহারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তারই বাস্তব প্রতিফলন। তবে সেখানে সামরিক কোনো প্রয়োগ নেই।
পরমাণু প্রতিবেশীদের মাঝে বাংলাদেশের অবস্থান
ভারত ও পাকিস্তানের মাঝে অবস্থিত বাংলাদেশ, কোনো পারমাণবিক সংঘাত ঘটলে এর প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়বে আমাদের ভূখণ্ডে। মানবিক সংকট, সীমান্ত সমস্যা, জ্বালানিসংকট, আমদানি-রপ্তানি বন্ধসহ অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা—সবকিছু মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে।
তাহলে প্রশ্ন ওঠে—বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতি কতটা যথাযথ?
বাংলাদেশের সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবতা
১. প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা:পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে হলে প্রয়োজন উচ্চমাত্রার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম, গোপন ল্যাব, দক্ষ বিজ্ঞানী ও জটিল অবকাঠামো। বাংলাদেশের হাতে এসব এখনও নেই।
২. অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট:একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখনো স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য ও অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যস্ত। কোটি কোটি ডলার খরচ করে পারমাণবিক অস্ত্র বানানো বাস্তবসম্মত নয় এবং তা জনগণের মৌলিক চাহিদার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
৩. আন্তর্জাতিক চাপ ও পরিণতি:পারমাণবিক অস্ত্রে হাত দিলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক অবরোধ ও কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতার ঝুঁকি রয়েছে—যা বাংলাদেশের বৈদেশিক সহায়তা নির্ভর বাস্তবতায় আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে।
বাংলাদেশ বরাবরই শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতি অনুসরণ করে আসছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তারই প্রমাণ। তবে শান্তিপ্রিয়তা কখনোই দুর্বলতা নয়।
বিকল্প প্রতিরক্ষা কৌশল হতে পারে:
* আধুনিক সামরিক ও গোয়েন্দা প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ
* কৌশলগত জোট গঠন (চীন, তুরস্ক, মুসলিম বিশ্ব বা আঞ্চলিক দেশগুলোর সঙ্গে)
* সাইবার নিরাপত্তা ও তথ্য-যুদ্ধ সক্ষমতা বাড়ানো
* বৈশ্বিক মঞ্চে সক্রিয় ও দৃঢ় কূটনৈতিক অবস্থান গ্রহণ
সেই ভয়ংকর পরিস্থিতির জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুতি নিতে হবে এখনই:
* বিকিরণ প্রতিরোধী আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ
* খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির মজুদ
* জরুরি চিকিৎসা সেবা ও সচেতনতা কর্মসূচি
* আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা প্রাপ্তির জন্য পরিকল্পনা
আজকের প্রশ্নটি গভীর এবং বাস্তব: বাংলাদেশ কি পারমাণবিক শক্তি অর্জনের পথে হাঁটবে, নাকি বুদ্ধিমত্তা ও কৌশল দিয়ে নিরস্ত্র অবস্থানেই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে?
যদিও পরমাণু অস্ত্র অর্জনের পথ খরচসাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও অনৈতিক হতে পারে, তবু আমাদের নিরাপত্তা ও সম্মান বজায় রাখতে বিকল্প, আধুনিক এবং কার্যকর পথ খুঁজে বের করতেই হবে—যাতে বাংলাদেশ থেকে যায় নিরাপদ, সক্ষম ও মর্যাদাসম্পন্ন।
সোহাগ/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- অবশেষে বাংলাদেশীদের জন্য ভিসা পুনরায় চালু
- যাকে প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসাতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা
- বাংলাদেশকে ঘিরে ইরানের পরোক্ষ বার্তা
- ইরানের বিজয় ও মহানবী (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী
- সয়াবিন তেলের দাম কমে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন
- বাংলাদেশের ১০টি সবচেয়ে নিরাপদ ব্যাংক, ২০২৪-এর পারফরম্যান্সে যারা এগিয়ে
- আগামী ২৪ ঘণ্টা কেন ভয়ংকর হতে পারে
- বড় সুখবর দিলো সংযুক্ত আরব আমিরাত
- ইরান-ইসরায়েল সংঘাত: চীনের অবস্থান স্পষ্ট
- বি-২ বোমারু বিমান কীভাবে রাডার ফাঁকি দিয়ে ইরানে হামলা চালালো
- পুরুষদের গোসল ফরজ হলে যেসব কাজ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
- ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র দিতে প্রস্তুত কিছু দেশ
- মৃত্যুর পর ভাইবোনের আর দেখা হবে না
- স্বর্ণের বাজারে ধস: কমছে দাম
- আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি বড় ধাক্কার মুখে পড়বে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী