ঢাকা, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২

সিসি ক্যামেরা হ্যাক করে শত্রুদের লক্ষ্যে নজরদারি করছে ইরান

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২১ ১০:৩২:১১
সিসি ক্যামেরা হ্যাক করে শত্রুদের লক্ষ্যে নজরদারি করছে ইরান

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসরায়েলের ঘরে বসানো সাধারণ সিসিটিভি ক্যামেরাগুলিই এখন দেশটির জন্য এক নতুন ধরনের নিরাপত্তা হুমকিতে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের দাবি—ইরানি হ্যাকাররা পরিকল্পিতভাবে এই ক্যামেরাগুলো হ্যাক করে ঘরোয়া ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে এবং সেখান থেকে হামলার লক্ষ্যে স্থান নির্ধারণ করছে।

সম্প্রতি একাধিক ইসরায়েলি রেডিও চ্যানেলে প্রচারিত সতর্কবার্তায় জানানো হয়েছে, তেহরান-সমর্থিত হ্যাকাররা ইসরায়েলি নাগরিকদের ব্যক্তিগত ক্যামেরা সিস্টেমে প্রবেশ করে সেখানকার ভিডিও সংগ্রহ করছে। এসব ফুটেজ ব্যবহার করে ভবিষ্যতের সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু শনাক্ত করা হচ্ছে এবং পুরনো হামলার ক্ষয়ক্ষতির বিশ্লেষণও করা হচ্ছে।

তেলআবিবে সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর এক সাবেক ইসরায়েলি সাইবার নিরাপত্তা কর্মকর্তা সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, “বাসার সিসিটিভি এখন আমাদের দুর্বলতার জায়গা। এই ক্যামেরাগুলো হ্যাক করেই আমাদের অবস্থান ও দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করছে শত্রু। তাই এগুলো বন্ধ রাখা অথবা শক্তিশালী পাসওয়ার্ড দেওয়া এখন সময়ের দাবি।”

তিনি আরও জানান, হ্যাক করা ভিডিও দেখে ইরানি গোয়েন্দারা সহজেই বুঝে নিতে পারছে হামলার প্রভাব, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং ভবিষ্যতে কোথায় কেমন আক্রমণ চালালে সর্বোচ্চ ফল পাওয়া যাবে।

ইসরায়েলের সাইবার নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, যুদ্ধকৌশলের অংশ হিসেবে ইরান ধারাবাহিকভাবে ইন্টারনেট সংযুক্ত সিসিটিভি ক্যামেরাগুলোকে টার্গেট করছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে সরকারি-বেসরকারিভাবে বহু হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছে তারা।

তবে এই হ্যাকিং নতুন কোনো ঘটনা নয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার আগেও হামাস ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী বহু ব্যক্তিগত ক্যামেরা হ্যাক করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেছিল। সেই সময় ইসরায়েলের তৎকালীন সাইবার প্রধান জানিয়েছিলেন, হাজার হাজার সিসিটিভি ক্যামেরা কার্যত হামাসের গোয়েন্দা নেটওয়ার্কে পরিণত হয়েছিল।

নিরাপত্তার প্রয়োজনে বহু ইসরায়েলি পরিবার তাদের বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসালেও দুর্বল পাসওয়ার্ড এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা না থাকায় সেগুলো সহজেই হ্যাক হয়ে যাচ্ছে। এতে সেনাবাহিনীর গতিবিধিও ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

তবে এই সাইবার সংঘাতে ইরানও ক্ষতির বাইরে নেই। ইসরায়েলি হ্যাকার গ্রুপ ‘Predatory Sparrow’ সম্প্রতি দাবি করেছে, তারা ইরানের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ ‘Nobitex’ থেকে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার চুরি করেছে। একইসঙ্গে ইরানের দুটি বড় ব্যাংকে চালানো হয়েছে সাইবার হামলা।

বর্তমান যুদ্ধাবস্থা যেন এক নতুন সাইবার ফ্রন্টলাইন তৈরি করেছে—যেখানে শুধু ক্ষেপণাস্ত্র নয়, তথ্য, ক্যামেরা ও ভিডিও ফুটেজও পরিণত হয়েছে আধুনিক অস্ত্রে।

রাকিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ