ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

চোরাবালির ফাঁদে ইউনুস সরকার

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২১ ২০:২৮:০২
চোরাবালির ফাঁদে ইউনুস সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রফেসর ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত বর্তমান সরকার এক গভীর সংকটে পড়েছে। মূল সমস্যা তাঁর চিন্তাধারায়—তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার জটিল বিষয়গুলো এনজিওর দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বিচার করছেন। এনজিও ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে উঠে আসা ইউনুস সরকারের এই ‘এনজিও মনোভাব’ রাষ্ট্র পরিচালনায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

রাষ্ট্র কোনো একমাত্রিক বিষয় নয়। এটি বহুমাত্রিক ও সূক্ষ্ম কাঠামোর সমষ্টি। সেখানে এনজিওর মতো একমুখী চিন্তা প্রয়োগ করলে নীতিগত বিপর্যয় অনিবার্য—এটা ইতিমধ্যেই তাঁর সরকারের কিছু সিদ্ধান্তে প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রফেসর ইউনুসের ধারণা, সমাজের জন্য ভালো কিছু করতে চাইলে তা দ্রুত কার্যকর করাই যথেষ্ট। গণতান্ত্রিক পর্যালোচনার প্রয়োজন নেই—এই চিন্তাভাবনাই তাঁকে চোরাবালিতে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রের কাঠামো এনজিওর মতো নয়—এখানে প্রতিটি সিদ্ধান্তে জনগণের বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দিতে হয়।

সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের একটি প্রতিবেদন ঘিরে বিতর্ক তুঙ্গে। এই প্রতিবেদনে ধর্মীয় আইনের কিছু দিককে নারীবিদ্বেষী বলা হয়েছে, যা জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ধর্মীয় বিশ্বাস মানুষের আত্মিক চেতনার অংশ—এমন সংবেদনশীল বিষয়ে হঠাৎ করে প্রশ্ন তোলা জনগণের জন্য তা গ্রহণযোগ্য নয়।

এছাড়াও, যৌনকর্মীদের 'শ্রমিক মর্যাদা' দেওয়ার প্রস্তাবও বিতর্কিত। এটি বাস্তবতা বিবেচনা না করে সরাসরি পশ্চিমা ধারণা থেকে আমদানি করা। অথচ ইউরোপের বহু দেশ, যেমন ফ্রান্স বা সুইডেন, এখন যৌনকর্মীদের নয় বরং খদ্দেরদের অপরাধী করার পথে হাঁটছে। সেখানে আমাদের সমাজের পরিপ্রেক্ষিতে উল্টো পথ নেওয়া কতটা বাস্তবসম্মত?

নারীর সম্পত্তির অধিকার নিয়েও বিতর্ক আছে। অনেকের মতে ধর্মীয় বিধানে মেয়েরা বৈষম্যের শিকার। কিন্তু এই বিধান শুধু সম্পত্তির হিসাব নয়, বরং সমাজে পারিবারিক সম্পর্ক ও দায়িত্ববোধের একটা ভারসাম্য রক্ষা করে। ভাই-বোন, মামা-ভাগ্নে সম্পর্ক আমাদের সমাজ কাঠামোর ভিত্তি—এগুলো ভেঙে দিলে সমাজও টিকবে না।

ভারতের মুসলিম সমাজের ওয়াকফ সম্পত্তি এখন ইউনিফর্ম সিভিল কোড-এর মাধ্যমে সরকার কব্জা করতে চাইছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ‘সম্পত্তিতে সমান অধিকার’-এর মতো ধারণার মাধ্যমে ধর্মীয় কাঠামো দুর্বল করার চেষ্টা হচ্ছে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছেন ইউনুস। তাই তাঁর দায়িত্ব এই দেশের মানুষের বিশ্বাস, ধর্মীয় অনুভূতি ও সংস্কৃতিকে সম্মান করা। বিদেশি দাতাদের ধারণা দিয়ে রাষ্ট্র চালানো যাবে না—এই দেশ কোনো গবেষণাগার নয়, এই জাতি কোনো পরীক্ষার গিনিপিগ নয়। এই জাতি গড়ে উঠেছে বিশ্বাস, ঐতিহ্য আর আত্মপরিচয়ের ভিতের উপর।

এই বাস্তবতা যদি তিনি অগ্রাহ্য করেন, তাহলে একদিন এই জনগণই তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। তখন তাঁর বড় পরিচয় বা বিদেশি সমর্থন কোনোটিই কাজে আসবে না—ইতিহাস বারবার তা প্রমাণ করেছে।

তাই, জনগণের সঙ্গে সংযোগ অটুট রেখে, তাদের বিশ্বাস ও সমাজ কাঠামোকে শ্রদ্ধা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করলেই তিনি দীর্ঘস্থায়ী নেতা হয়ে উঠতে পারবেন। না হলে, তিনিও ইতিহাসে পরিণত হবেন আরেকটি ব্যর্থ অধ্যায়ে—যা মনে রাখা হবে শুধু আক্ষেপ আর হতাশার সঙ্গে।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত