ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

প্রযুক্তির দাস প্রজন্ম ও ইসলামের হারানো আলো

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৪ ১৭:৩৩:০১
প্রযুক্তির দাস প্রজন্ম ও ইসলামের হারানো আলো

বিশেষ প্রতিবেদন: এক রাতে নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) গভীর ঘুম থেকে আতঙ্কিত অবস্থায় জেগে উঠলেন। তাঁর মুখে ধ্বনিত হচ্ছিল, *“লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ!”* ঘুমন্ত স্ত্রীর কণ্ঠে উদ্বিগ্ন প্রশ্ন, “হে আল্লাহর রাসূল, কী হয়েছে?”

নবীজি (সাঃ) গভীর উদ্বেগ নিয়ে বললেন, “আজ রাতে আমি এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখেছি। এমন একটি ফিতনার ছায়া আমি অনুভব করেছি, যা আরব জাতির ওপর নেমে আসবে। এক ধ্বংসাত্মক বিপর্যয়, যা তাদের চেতনাকে গ্রাস করবে।”

তিনি আরও বললেন, “আজ রাতে আমি দেখেছি—যে দেয়াল যুলকারনাইন ইয়াজুজ-মাজুজ থেকে রক্ষার জন্য তৈরি করেছিলেন, তাতে একটি ফাঁক দেখা দিয়েছে। এই ফাঁক ভবিষ্যতের ফিতনার দরজা খুলে দিয়েছে।”

নবীজির ভাষ্য ছিল, “যেদিন সমাজে বেহায়াপনা, অশ্লীলতা ও নৈতিক অবক্ষয় ছড়িয়ে পড়বে—সেদিন শুধু সাধারণ মানুষ নয়, বরং জ্ঞানী-গুণী, আলেম, ইমাম এমনকি শিক্ষিত শ্রেণিও এই ধ্বংসের শিকার হবে।”

আজকের সমাজের দিকে তাকালে নবীজির সেই বর্ণনার প্রতিচ্ছবি যেন স্পষ্ট হয়ে ধরা দেয়। আমরা দেখছি—পর্নোগ্রাফির দৌরাত্ম্য, বেপর্দা সংস্কৃতি, মাদকাসক্তি, সুদের প্রভাব এবং নৈতিকতাবিহীন এক তরুণ প্রজন্ম, যারা প্রযুক্তির দাসে পরিণত হয়েছে।

মোবাইল ফোনে গা ডুবিয়ে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা টিকটকে, ফেসবুকে, হারাম সম্পর্ক ও গেমের জগতে ডুবে থাকা এই প্রজন্ম কি আদৌ জাতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব দিতে পারবে?

ভাই ও বোনেরা, এ সময়ে একমাত্র আশ্রয় ইসলামী শিক্ষা, কোরআনের আলো, এবং নামাজের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি। আমাদের দরকার এমন অভিভাবক, যারা সন্তানদের শুধু আধুনিক শিক্ষায় নয়, বরং ইসলামের ভিত্তিতে গড়ে তুলবেন—নৈতিক, আত্মনিয়ন্ত্রিত এবং ঈমানদার করে।

আমরা ভুলে গেছি আমাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীত—যেখানে মুসলিম বিজ্ঞানী, দার্শনিক ও চিকিৎসকরা মানবসভ্যতার শিখরে পৌঁছেছিলেন। ইবনে সিনা, জাবির ইবনে হাইয়ান, ইবনে রুশদের মতো মনীষীরা ছিলেন আমাদের ইতিহাসের উজ্জ্বল নক্ষত্র।

আজ যদি আমরা প্রযুক্তিকে গ্রহণ করি, তবে তা হওয়া উচিত দ্বীনের খেদমতে ব্যবহৃত এক উপায়। আমাদের দায়িত্ব হলো সমাজে নৈতিকতা ফিরিয়ে আনা এবং ইসলামের দাওয়াতকে পৌঁছে দেওয়া প্রতিটি হৃদয়ে।

আমাদের সন্তানদের এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যেন তারা হয় হযরত ইসমাইল (আঃ)-এর মতো আত্মত্যাগী, হযরত মারিয়াম (আঃ)-এর মতো পবিত্র চরিত্রের অধিকারী। তাদের জীবন হোক দীনের পথে এক আলোকবর্তিকা—not TikTok এর ভিডিও আর প্রেমের গল্পে বিভোর এক দিশাহীন প্রজন্ম।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে হেদায়েত দান করুন। আমাদের সন্তানদের হেফাজত করুন এই অশ্লীলতা ও বিপথগামিতা থেকে। আমিন।

— সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ