ঢাকা, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২

আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার পথে বাংলাদেশ: সম্ভাবনা ও বাধা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ১৯ ১২:১০:৪৩
আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার পথে বাংলাদেশ: সম্ভাবনা ও বাধা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি ঢাকার নিকটবর্তী নারায়ণগঞ্জ থেকে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও তাদের শীর্ষ নেতা আতাউল্লাহ জননীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এই সংগঠন, যা মূলত রোহিঙ্গাদের জন্য কাজ করলেও বর্তমানে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার পক্ষে কাজ করছে, তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযান চালানো হয়েছে।

আরাকান আর্মি, যা মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত, তাদের মূল লক্ষ্য ছিল রাখাইন প্রদেশে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। সম্প্রতি তারা তাদের নাম পরিবর্তন করে ঘোষণা করেছে যে, তারা শুধু রাখাইন নয়, বরং রোহিঙ্গা, কুকি, চীনসহ বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সম্মিলিত স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করবে। গত বছর ২৩ ডিসেম্বর তারা চীনা আর্মির সঙ্গে মিলিত হয়ে দুই প্রদেশ পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

এদিকে, চীন বাংলাদেশকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছে। জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্টনিও গুতেরেস বলেছেন, "এখানে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত মানবিক আইন মেনে অসহায় মানুষের সুরক্ষা এবং সম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা।"

বাংলাদেশ এই বিষয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানিয়েছেন, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, কারণ দেশের ২৭১ কিলোমিটার সীমান্তের অনেক অংশ এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এর মধ্যে কিছু অংশ নদী পথে, কিছু অংশ স্থলপথে রয়েছে।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গিয়ে রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেছেন, "এবারের ঈদ হয়তো আপনাদের নিজের ভূমিতে কাটানো হবে না, তবে আগামী ঈদ আপনি নিজের বাড়িতে পালন করতে পারবেন।"

তবে, প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের মতো একটি স্বাধীন রাষ্ট্র মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যেমন আরাকান আর্মির সঙ্গে কিভাবে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করতে পারে? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, একমাত্র আরাকান আর্মির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে, তবে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

জাতিসংঘ মহাসচিব গুতেরেস এই বিষয়টি নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের, যেমন আমেরিকা, চীন এবং ভারত, মিয়ানমারের পরিস্থিতিতে পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে থাকে, তবে বাংলাদেশ বরাবরই নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। মুসলিম ভ্রাতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ কখনোই রোহিঙ্গা বিরোধী কোনো পদক্ষেপে অংশ নেয়নি।

এখন, যখন আরাকান আর্মি বহুজাতিক রাষ্ট্র গঠনের কথা বলছে, তাদের আন্তরিকতার প্রমাণ হবে যদি তারা রোহিঙ্গাদের শান্তিপূর্ণভাবে আরাকানে ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়। যদিও আরসা তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল, এখন তারা গ্রেফতার হয়ে পরিষ্কার বার্তা পেয়েছে যে, বাংলাদেশ আরাকান আর্মির সঙ্গে কোনো ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত নয়।

এখন দেখা যাক, আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সঙ্গে আলোচনায় বসে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে কি না।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত