ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২

ইউনুসের জন্য বিশেষ বিমান পাঠিয়ে চীন মোদিকে কী বার্তা দিল

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৮ ১৬:১০:৩৬
ইউনুসের জন্য বিশেষ বিমান পাঠিয়ে চীন মোদিকে কী বার্তা দিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ দিল্লির আকাশ মেঘলা, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বারান্দায় চা হাতে বসে আছেন নরেন্দ্র মোদি। এক সময় চাওয়ালা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন যে, একদিন তিনিই দক্ষিণ এশিয়ার সব হিসাব-নিকাশ ঠিক করবেন। কিন্তু আজ তিনি দেখছেন, সেই হিসাব যেন উল্টে যাচ্ছে। মোদি জানতেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব কিছু ঠিক থাকবে, কিন্তু এখন তিনি দেখতে পাচ্ছেন, ইউনুসের মতো একজন ব্যক্তি যেন সব কিছু গড়বড় করে দিচ্ছে।

মোদি ভাবতেন, নোবেলজয়ী শান্তিপ্রিয় এই মানুষটি রাজনীতির কঠিন খেলায় টিকতে পারবেন না, কিন্তু এখন তিনি দেখছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তার জন্য একটি বিশেষ ফ্লাইট পাঠাচ্ছেন। এর মানে কী? সত্যিই কি ইউনুস এতটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাজনৈতিক শক্তির কেন্দ্র হিসেবে?

বাংলাদেশের আকাশে তখন গভীর রাত, তবে ঢাকার বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্চ ঝলমল করছে। বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস বিশেষ ফ্লাইটের অপেক্ষায়। উদ্দেশ্য—বেইজিং। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাঠানো বিশেষ বিমান তাকে নিতে আসছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। এর আগে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান এমন সম্মান পাননি, যা ইঙ্গিত দেয় যে ইউনুস কেবল বাংলাদেশের নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নেতা হয়ে উঠছেন।

এই সফর কেবল দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের আনুষ্ঠানিকতার অংশ নয়, বরং এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। একই সঙ্গে, এটি ভারতের জন্য একটি বড় কূটনৈতিক ধাক্কা। বিশ্লেষকরা বলছেন, চীনের এই বিশেষ ফ্লাইট পাঠানো কোনো সাধারণ আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি একটি গভীর কৌশলগত সিদ্ধান্ত। চীন সাধারণত এই ধরনের বিমান শুধুমাত্র তাদের কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের জন্য পাঠায়, এবং এর মাধ্যমে তারা স্পষ্টতই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে ইউনুসকে তারা দক্ষিণ এশিয়ায় তাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন ইউনুসকে শুধু বাংলাদেশের নেতা হিসেবেই নয়, বরং দক্ষিণ এশিয়ার কৌশলগত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেখতে চায়। তার দীর্ঘমেয়াদী ক্ষমতা নিশ্চিত করতে চীন সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দিতে পারে। এর মাধ্যমে চীন ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে একটি দীর্ঘমেয়াদী কৌশলগত মিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাচ্ছে।

এছাড়াও, চীনের এই বিমান পাঠানোর সিদ্ধান্ত বিশ্বের অন্যান্য পরাশক্তির জন্য একটি বার্তা বহন করছে। এটি ওয়াশিংটন এবং দিল্লির জন্য স্পষ্ট ইঙ্গিত, যে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে চীন আর কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য অপেক্ষা করতে রাজি নয়।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বাংলাদেশের ক্ষমতার পালাবদলের পর ভারত কিছুটা দ্বিধাগ্রস্ত আচরণ করছে। শেখ হাসিনার সরকারের বিদায়ের পর, নয়া সরকার গঠিত হলেও, নরেন্দ্র মোদির সরকার যেন এই পরিবর্তন মেনে নিতে পারছে না। এর প্রভাব স্পষ্ট হয়েছে দুই দেশের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক অবস্থানে, যেখানে ভারতের নিরাশ্রয় মনোভাব প্রাধান্য পেয়েছে।

চীনের জন্য, এটি যেন একটি সুবর্ণ সুযোগ। ইউনুসের সরকার গঠনের পরপরই বেইজিং ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করতে চেয়েছে, আর সেই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। চীনের এই আগ্রাসী কূটনৈতিক তৎপরতার বিপরীতে ভারত বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া আসেনি, তবে ভারতীয় মিডিয়া এক প্রতিবেদনে লিখেছে, "ভারত নীরব, কিন্তু সংকিত।" তারা আরো উল্লেখ করেছে, ভারতের কূটনৈতিক ভুলগুলো এতটাই প্রকট যে, তারা এখন বাংলাদেশের প্রতি নিজেদের অবস্থান নতুন করে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ভারত এখনই বাংলাদেশকে কৌশলগতভাবে গুরুত্ব না দেয়, তবে দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের আধিপত্য আরও সুসংহত হবে।

বৃষ্টির ফোঁটাগুলো যেন দিল্লির দূষিত বায়ুকে ধুয়ে দিচ্ছে, কিন্তু এটি কি শুধু ঢাকার প্রফেসর ইউনুসের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছে? দিল্লি থেকে 1700 কিলোমিটার দূরে ঢাকা বিমানবন্দরে মোহাম্মদ ইউনুস বিশেষ ফ্লাইটে উঠছেন। তার চেহারায় আত্মবিশ্বাসের ছাপ, পেছনে এক নতুন ইতিহাসের ছায়া। ভারত কি আসন্ন পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত? দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বনেতার মঞ্চে মোদির ছায়া ম্লান হয়ে যাচ্ছে, নতুন আলোয় উদ্ভাসিত হচ্ছেন প্রফেসর মোহাম্মদ ইউনুস।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত