ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২

বাংলাদেশের ইতিহাসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দুই সেনাপ্রধানের অমর ভূমিকা

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ ফেব্রুয়ারি ২৬ ১৪:৩৬:৩৮
বাংলাদেশের ইতিহাসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দুই সেনাপ্রধানের অমর ভূমিকা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতে বিভিন্ন সময়ে সিনিয়র অফিসারদের মধ্যে দ্বন্দ্ব, রাজনৈতিক অস্থিরতা, অভ্যুত্থান ও পাল্টা অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে দীর্ঘ সময় দেশ সামরিক শাসনের অধীনে ছিল। অধিকাংশ সেনাপ্রধানই ক্ষমতার লোভে সামরিক শাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, তবে দুইজন সেনাপ্রধান ছিলেন যারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য কখনোই ক্ষমতার কাছে পরাজিত হননি। তাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সামরিক শাসন থেকে মুক্তি পেয়ে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে গেছে।

এই দুই সেনাপ্রধান হলেন জেনারেল নুরুদ্দিন খান এবং জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান, যারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে অবিস্মরণীয় ভূমিকা রেখেছেন।

১৯৯০ সালের গণআন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল এরশাদ দেশে সেনাশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু জেনারেল নুরুদ্দিন খান তার দৃঢ় বিরোধিতা করেন এবং জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন। এর পর, ২০০৭ সালে, বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকারুজ্জামান শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন শেখ হাসিনা তাকে সেনাবাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে গুলি করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তবে জেনারেল ওয়াকার জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে সেনাবাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার না করার কঠিন সিদ্ধান্ত নেন। এটি ছিল একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত, কারণ তার সামনে ছিল আত্মীয়তার সম্পর্ক এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার এক কঠিন সমীকরণ। তবে তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্রের পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছিলেন এবং ইতিহাসে চিরকাল অমর হয়ে থাকেন।

জেনারেল ওয়াকার একবার বলেছিলেন, "দেশের সেনাবাহিনী কোনো আলাদা দ্বীপের বাসিন্দা নয়, তাই আমরা জনগণের পাশে থাকবো।" তার এই মন্তব্য দেশপ্রেম এবং সেনাবাহিনীর জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতার এক দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, জেনারেল নুরুদ্দিন খান ১৯৯০ সালের ৩১ আগস্ট থেকে ১৯৯৪ সালের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সেনাপ্রধান ছিলেন। ২০০১ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে রাজনীতি থেকে সরে যান। ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে তার সাহসী ভূমিকার কারণে এরশাদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়।

২০০৭ সালে, অন-ইলেভেন সরকার সেনাবাহিনীকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগের নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দৃঢ় অবস্থান নেন। তার এই অটল অবস্থান আজও অব্যাহত রয়েছে।

প্রতি বছর জাতীয় শহীদ সেনাদিবসে, জেনারেল ওয়াকার তার দেশপ্রেমের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

এই দুই সেনাপ্রধানের সাহসী ভূমিকার কারণে বাংলাদেশ গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে, এবং তাদের অবদান ইতিহাসে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত