বিএনপি ও খেলাফত মজলিসের বৈঠকে সাত বিষয়ে ঐকমত্য

০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি, বুধবার, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক বৈঠকে বিএনপি ও খেলাফত মজলিসের নেতারা চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন। বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে ২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে একমত হওয়ার পাশাপাশি, সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। এসব বিষয়ে দুই দলের মধ্যে সুস্পষ্ট সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতের রাজনৈতিক পরিবেশকে প্রভাবিত করবে।

ঐকমত্য হওয়া সাতটি বিষয় হলো:

১. জাতীয় ঐক্য সুসংহত করা: ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ার জন্য আন্তদলীয় সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত। ২. জাতীয় নির্বাচন ২০২৫ সালের মধ্যে করা: দ্রুত প্রয়োজনীয় নির্বাচন কমিশন সংস্কার শেষ করে ২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত। ৩. দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ: দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির লাগাম টেনে ধরার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া। ৪. আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি: দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। ৫. ইসলামী মূল্যবোধ ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা: ইসলামি মূল্যবোধ রক্ষার পাশাপাশি দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখা। ৬. স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য: স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্য সুরক্ষিত রাখা। ৭. বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের বিচার: খুন, গুম, হত্যা, নির্যাতনে জড়িতদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের পদক্ষেপ নেওয়া।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের বলেন, "এক সময় যেসব বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল, এখন সময়ের প্রেক্ষিতে আমরা একত্রে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।" তিনি আরও বলেন, বিএনপি ও খেলাফত মজলিসের মধ্যে একসঙ্গে আন্দোলন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে এবং বর্তমানে তারা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

এছাড়া বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা শফিকুর রহমানের চরমোনাইয়ের পীরের সঙ্গে বৈঠকও আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। এটি দুই দলের মধ্যে নতুন রাজনৈতিক যোগাযোগের পথ খুলে দিয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের নির্বাচনী কৌশল ও পরিকল্পনায় প্রভাব ফেলতে পারে।

এই বৈঠক দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দিয়েছে, যা সামনে আসন্ন নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।