হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলায় বিল দখলকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের এই সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা এবং শেষ পর্যন্ত সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামে কাঞ্জা বিল দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। জানা গেছে, লাখাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফ আহমেদ রুপন এবং ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারিছ মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এই বিল নিয়ে বিরোধ চলছিল।

বিরোধের সূত্র ধরে দুই পক্ষের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের কেন্দ্রস্থল ছিল স্থানীয় পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনের এলাকা।

সন্ধ্যা ছয়টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়, যা টানা রাত নয়টা পর্যন্ত চলে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়পক্ষের লোকজন টর্চলাইটের আলো জ্বালিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এই রক্তক্ষয়ী ঘটনায় নারী ও শিশুরাও রেহাই পায়নি।

সংঘর্ষে গুরুতর আহত চারজনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আরও ৩০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে লাখাই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় সেনাবাহিনীর সহায়তা নেওয়া হয়। রাত ৯টার দিকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে সংঘর্ষ থামায় এবং এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করে।

সংঘর্ষের পর থেকে পুরো এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্থানীয়রা চরম আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সম্ভাব্য সংঘর্ষ ঠেকাতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

লাখাই থানার ওসি বন্দে আলী জানান, “এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে উত্তেজনা এড়াতে প্রশাসন পুরোপুরি সতর্ক আছে।”

এই সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখন প্রশাসনের কার্যক্রমের দিকে তাকিয়ে আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে স্থানীয় প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।