ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২

হোয়াইট হাউস থেকে জাকারবার্গকে বের করে দিলেন ট্রাম্প, কী ঘটেছিল সেদিন

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুলাই ০৩ ২১:১২:০৩
হোয়াইট হাউস থেকে জাকারবার্গকে বের করে দিলেন ট্রাম্প, কী ঘটেছিল সেদিন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্বজুড়ে প্রযুক্তি দুনিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি মার্ক জাকারবার্গ। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং মেটা প্ল্যাটফর্মের সিইও হিসেবে তার নামের ওজন হালকাভাবে নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু সব ওজন যেন এক মুহূর্তে হালকা হয়ে গেল, যখন তাকে হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিস থেকে বেরিয়ে যেতে বলা হলো।

এই চমকপ্রদ ঘটনাটি ঘটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি উচ্চপর্যায়ের সামরিক বৈঠক চলাকালীন সময়ে। ৩ জুলাই নিউইয়র্ক পোস্ট এক প্রতিবেদনে দাবি করে, হোয়াইট হাউসে এক গোপন সামরিক প্রকল্প—যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছিল। সেই বৈঠকে ছিলেন দেশের শীর্ষ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা, আর সেখানেই ‘অপ্রত্যাশিতভাবে’ প্রবেশ করেন জাকারবার্গ।

বিস্ময় আরও বাড়ে যখন জানা যায়, তিনি ছিলেন না সেই বৈঠকের আমন্ত্রিতদের তালিকায়। এমনকি তার সেই নির্দিষ্ট বৈঠকের জন্য প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ছাড়পত্রও ছিল না। ফলে বিষয়টিকে ‘নিরাপত্তা লঙ্ঘন’ হিসেবে চিহ্নিত করে সেনা কর্মকর্তারা তাকে কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন—তাৎক্ষণিকভাবে।

ঘটনার এই বর্ণনা ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয় তোলপাড়। কেউ বলছে, জাকারবার্গ ইচ্ছাকৃতভাবে ‘প্রভাব বিস্তারের জন্য’ গিয়েছিলেন, কেউ বলছে এটা নিছক ভুল বোঝাবুঝি।

তবে পুরো ঘটনার অন্যরকম ব্যাখ্যা দিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল। তাদের মতে, ঘটনাটি যতটা নাটকীয়ভাবে উপস্থাপিত হয়েছে, বাস্তবে ততটা নয়। হোয়াইট হাউসের একাধিক সূত্র জানায়, জাকারবার্গ ওই কক্ষে প্রবেশ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুরোধেই—শুধু সৌজন্য বিনিময়ের জন্য। বৈঠকের মূল আলোচনায় অংশগ্রহণ না করে, তিনি নিজেই সেখান থেকে বেরিয়ে যান, কারণ তার মূল বৈঠকটি ছিল সামরিক সেশন শেষ হওয়ার পর।

তবুও প্রশ্ন থেকেই যায়—এই ঘটনাটি কি নিছক এক ভুল সময়ে উপস্থিতি? নাকি রাজনীতির জটিল খেলায় নতুন একটি চাল?

জাকারবার্গের রাজনৈতিক অবস্থান বরাবরই আলোচনার বিষয়। একসময় ডেমোক্র্যাটপন্থী বলে পরিচিত হলেও, সাম্প্রতিক সময়ে তার অবস্থান অনেকটাই পাল্টেছে। ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ অনুষ্ঠানগুলোতে তার উপস্থিতি, এমনকি ২০২৫ সালে ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে তাকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে দেখা যাওয়া—সবই ইঙ্গিত দেয় অন্য কিছুর।

তবে এই ঘটনাটি কেবল একটি ‘দরজার ভেতরে-বাইরের’ বিষয় নয়। এটি স্পষ্ট করে দেয়, মার্কিন রাজনীতিতে প্রযুক্তি জায়ান্টদের প্রভাব কতটা গভীরে প্রবেশ করেছে, এবং ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে কারা জায়গা করে নিচ্ছে।

সুতরাং প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই অদ্ভুত মুহূর্তটি কাকতালীয়, না কি বড় কোনো ঘটনার পূর্বাভাস? ট্রাম্প-জাকারবার্গ সম্পর্কের এই সূক্ষ্ম টানাপোড়েন ভবিষ্যতে কী রূপ নেবে, তা সময়ই বলে দেবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ