যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শর্তে বাংলাদেশের জন্য চাপে সুযোগ ও সংকেত

নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেতে চাইলে বাংলাদেশকে আরও বেশি পরিমাণে মার্কিন তুলা আমদানি করতে হবে—সম্প্রতি এমন একটি শর্ত দিয়েছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত এক গোপন বৈঠকে এই বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তর।

ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। যুক্তরাষ্ট্রের তরফ থেকে তুলা আমদানির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তোলা হলে, তিনি এতে দ্রুত সম্মতি জানান। আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক ছিল প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের উপস্থিতি, যিনি তার স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা স্টারলিংক নিয়ে বাংলাদেশে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, মাস্ক এবং স্টারলিংকের নির্বাহী রিচার্ড গ্রিফিথসের সঙ্গে ৯০ মিনিটের এক ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছে, যেখানে ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম X-এ খলিলুর রহমান লেখেন, “ইলনের সঙ্গে অসাধারণ একটি আলোচনা হয়েছে, এবং আমরা পারস্পরিক সহযোগিতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছি।”

তবে এই বৈঠকের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ওয়াশিংটন পোস্টের বিশ্লেষক ম্যাট বাই দাবি করেছেন, ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠান ও সাবেক মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তা তুলশি গাবার্ড অভিযোগ তুলেছেন—বাংলাদেশে নতুন সরকারের ছত্রছায়ায় ইসলামপন্থীদের প্রভাব বাড়ছে এবং সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন চলছে।

বাংলাদেশ সরকার এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, স্টারলিংকের মতো প্রযুক্তি গ্রহণই প্রমাণ করে যে সরকার ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের পুরোনো ধারা থেকে বেরিয়ে এসে উন্মুক্ত, আধুনিক তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে চায়।

এরই মধ্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্টারলিংককে দশ বছরের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। এর ফলে দেশের দুর্গম অঞ্চলে উচ্চগতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

এই বৈঠক ও চুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে স্পষ্ট—বাংলাদেশের সামনে যেমন প্রযুক্তি ও বাণিজ্য সম্প্রসারণের নতুন দরজা খুলছে, তেমনি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক চাপ ও ভারসাম্য রক্ষা করাও হয়ে উঠছে সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ।

রানা/