ঢাকা, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫, ৯ আষাঢ় ১৪৩২

আল আকসা মসজিদ মুসলিমদের হাতছাড়া হতে চলেছে

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৯ ২১:৫৮:৩৯
আল আকসা মসজিদ মুসলিমদের হাতছাড়া হতে চলেছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামের প্রথম কিবলা, মুসলিম উম্মাহর হৃদয়ের স্পন্দন – আল আকসা মসজিদ আজ এক ভয়াবহ ও অভূতপূর্ব সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন এবং ধারাবাহিক উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড মসজিদটির অস্তিত্ব ও পবিত্রতাকেই আজ প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।

সাম্প্রতিক পাসওভার ছুটির মধ্যে মাত্র কয়েকদিনেই ৬,০০০-এরও বেশি ইহুদি আল আকসা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছে। এ সংখ্যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর তুলনায় রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এই আগমন কোনও ধর্মীয় সহনশীলতার অংশ নয়, বরং ইসরায়েলি সরকারপ্রধান নেতানিয়াহুর নেতৃত্বে সেনা পাহারায় সংঘটিত এক সংঘবদ্ধ রাজনৈতিক প্রদর্শন।

১৯৬৭ সালে পূর্ব জেরুজালেম দখলের পর থেকে, মুসলমানদের আল আকসা প্রাঙ্গণে প্রার্থনার অধিকার ‘স্ট্যাটাস ক্বো’র আওতায় সুরক্ষিত ছিল। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সে নীতির বারবার লঙ্ঘন ঘটেছে। আজ সেখানে ইহুদিদের প্রকাশ্যে প্রার্থনা, এমনকি উৎসবমুখর গান-বাজনাও ঘটছে – যা ঐতিহাসিক ঐক্য ও ধর্মীয় ভারসাম্যকে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

সবচেয়ে চরম উদাহরণ তৈরি করেছেন ইসরায়েলি জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী এবং চরমপন্থী নেতা **ইতামার বেন গিভির**। তিনি সরাসরি আল আকসার ভেতরে ইহুদিদের জন্য একটি সিনাগগ নির্মাণের দাবি তুলে পরিস্থিতিকে উসকে দিয়েছেন, যা গোটা মুসলিম বিশ্বে প্রবল ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।

‘টেম্পল মাউন্ট’ নামক ইসরায়েলি সংগঠনের তথ্যমতে, এ বছর শুরু থেকেই ইহুদি প্রবেশের হার আগের বছরের তুলনায় ৩৭ শতাংশ বেড়েছে। ইসলামিক ওয়াকফ কর্তৃপক্ষও বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, এটি একেবারেই নজিরবিহীন ও পরিকল্পিত একটি দখল প্রক্রিয়ার ইঙ্গিত বহন করে।

একদিকে যখন ইহুদি অনুপ্রবেশ বাড়ছে, তখন মুসলমানদের প্রবেশাধিকার দিন দিন সীমিত হচ্ছে। জুমার নামাজ, শবে বরাত কিংবা শবে কদরের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় দিবসেও প্রবেশে বাধা, নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা এবং অকারণে মুসল্লিদের গ্রেফতার এখন নতুন স্বাভাবিক।

স্থানীয় মুসলিমরা বলছেন, ২০০৩ সাল থেকে ধীরে ধীরে এই দখলদার নীতির সূচনা হয়। আজ পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে মসজিদের চত্বরে ইহুদিরা শুধু প্রার্থনাই নয়, গান, নৃত্য ও উল্লাস করছে – যা মুসলমানদের জন্য চরম অপমানজনক ও গ্রহণযোগ্য নয়।

বিশ্লেষকরা হুঁশিয়ার করে দিয়েছেন – আল আকসার এই অবস্থা যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে তা গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সহিংসতা ও সংঘাতের স্ফুলিঙ্গ হয়ে উঠতে পারে।

আল আকসা শুধু একটি স্থাপনা নয় – এটি মুসলিম উম্মাহর আত্মার অংশ। এর মর্যাদা ও স্বাধীনতা রক্ষায় বিশ্ব মুসলিম নেতাদের এখনই ঐক্যবদ্ধ, কৌশলী ও দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়া সময়ের দাবি।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ