ঢাকা, শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২

স্বামীকে 'ভাই' বলা – ইসলাম কী বলছে

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২০ ২০:৪০:২৪
স্বামীকে 'ভাই' বলা – ইসলাম কী বলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: অনেক সময় আবেগ, ভালোবাসা কিংবা ঘনিষ্ঠতার কারণে কিছু স্ত্রী স্বামীকে 'ভাই' বা 'ভাইয়া' বলে সম্বোধন করেন। তবে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে এ ধরনের সম্বোধন নিরুৎসাহিত। হাদিসে এমন সম্বোধনের সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা পাওয়া যায়।

একটি সহিহ হাদিসে বর্ণিত আছে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে ‘বোন’ বলে সম্বোধন করলে রাসুলুল্লাহ (সা.) তা অপছন্দ করেন এবং ভবিষ্যতে এমন না করতে বলেন। (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস ২২০৪)

ফিকাহবিদগণও এ বিষয়ে স্পষ্ট মত দিয়েছেন। ফিকাহের গ্রন্থসমূহে স্বামীকে ‘ভাই’ বলে ডাকা ‘মাকরুহ’ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, অর্থাৎ এটি পরিত্যাজ্য এবং ইসলামী শিষ্টাচারের পরিপন্থী। তবে কেউ যদি ভুলবশত এমন বলে ফেলেন, তাতে বৈবাহিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়ে না এবং বিয়েও ভেঙে যায় না। (ফাতহুল কাদির ৪/৯১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৫০৭; রদ্দুল মুহতার ৩/৪৭০)

এ বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদ শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, হাদিসে স্বামীকে ভাই বা স্ত্রীকে বোন বলে সম্বোধন থেকে বিরত থাকার নির্দেশ রয়েছে। যদিও এতে দাম্পত্য সম্পর্ক ছিন্ন হয় না, তবুও আদব ও শালীনতার দৃষ্টিতে এটি পরিহার করা উত্তম।

ইসলামে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে এমন ভাষায় সম্বোধন করবে, যাতে পারস্পরিক সম্মান, ভালোবাসা ও মর্যাদা বজায় থাকে। অনেক সাহাবি নিজেদের সন্তানের নামের ভিত্তিতে ‘আবু ফুলাঁ’ বা ‘উম্মে ফুলাঁ’ নামে ডাকতেন। কেউ নাম ধরে ডাকলেও যদি তা সমাজে অসম্মানজনক মনে না হয়, তবে তাও বৈধ।

তবে যদি কোনো সমাজে স্বামীর নাম ধরে ডাকা অসম্মানজনক বিবেচিত হয়, তাহলে স্ত্রীকে সে বিষয়ে সংবেদনশীল হওয়া উচিত এবং এমন সম্বোধন বেছে নেওয়া উচিত, যা সম্মানজনক ও সম্পর্কের সৌন্দর্য বজায় রাখে।

সহিহ বুখারির এক বর্ণনায় রয়েছে, হযরত ইবরাহিম (আ.) যখন স্ত্রী হাজেরা (আ.) ও পুত্র ইসমাইল (আ.)-কে জনমানবহীন স্থানে রেখে যাচ্ছিলেন, তখন হাজেরা (আ.) স্বামীকে সরাসরি নাম ধরে ডাকেন। (সহিহ বুখারি: হাদিস ৩৩৬৫)

ইসলাম এমন কোনো শব্দ ব্যবহারের অনুমোদন দেয় না, যা সম্পর্কের প্রকৃতি বা মর্যাদাকে আঘাত করে। তাই আবেগপ্রবণতা থেকে হলেও স্বামীকে 'ভাই' বলে সম্বোধন করা থেকে বিরত থাকাই ইসলামী আদব অনুযায়ী শ্রেয়। সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ