শামীমের ব্যাটে ঝড়, চিটাগং কিংসের মাঝাড়ি সংগ্রহ

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) প্রথম কোয়ালিফায়ারে ফরচুন বরিশালের মুখোমুখি চিটাগং কিংস। মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবাল। চিটাগংয়ের ইনিংসের গল্পটা ছিল উত্থান-পতনে ভরা—টপ অর্ডারের ধসের পর শামীম হোসেন পাটোয়ারির দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ১৪৯ রান তুলেছে তারা। তবে মোহাম্মদ আলীর আগুনঝরানো বোলিং চিটাগংয়ের বড় সংগ্রহ গড়ার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছে।

পাওয়ার প্লেতেই বিধ্বস্ত চিটাগং

শুরুতেই ধাক্কা খায় চিটাগং। ইনিংসের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান খাওয়াজা নাফে, কিন্তু পরের বলেই কাইল মেয়ার্সের গতিতে কাবু হয়ে বোল্ড হয়ে যান তিনি। এরপর একই ওভারে গ্রাহাম ক্লার্ককে এলবিডব্লিউয়ের জোরালো আবেদন করলেও রিভিউ বাঁচিয়ে নেন এই ব্যাটার। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি ক্লার্ক, ড্রাইভ খেলতে গিয়ে ডেভিড মালানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৬ রান করে।

টপ অর্ডারের ধস নামানোর কাজটা চালিয়ে যান পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ আলী। তিনি আউট করেন চিটাগং অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুনকে, যিনি পুল করতে গিয়ে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে তাওহীদ হৃদয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে ধরা পড়েন। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ইবাদত হোসেন ফিরিয়ে দেন হায়দার আলীকে, যিনি মাত্র ৭ রান করে বোল্ড হন। ফলাফল—পাওয়ার প্লেতে মাত্র ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে চিটাগং।

শামীমের একার লড়াই

এক প্রান্তে উইকেট পড়লেও অন্য প্রান্তে অবিচল ছিলেন শামীম হোসেন পাটোয়ারি। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে প্রতিপক্ষ বোলারদের চাপে রাখেন তিনি। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন ওপেনার ইমন। এই জুটিতে খানিক স্বস্তি পেলেও ৩৬ রান করে রিশাদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ইমন। এরপর আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠেন শামীম। মাত্র ২৯ বলে হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ইনিংস লম্বা করার চেষ্টা করেন তিনি।

শেষদিকে খালেদ আহমেদ (৮ বলে ১ রান) তাকে কিছুটা সঙ্গ দিলেও, মোহাম্মদ আলীর বিধ্বংসী স্পেলে বেশি দূর যেতে পারেনি চিটাগং।

আলীর আগুনঝরা বোলিংয়ে ধস

ইনিংসের শেষ দিকে চিটাগংয়ের রান বাড়ানোর বড় ভরসা ছিলেন শামীম, কিন্তু তিনিও বেশিক্ষণ টিকে থাকতে পারেননি। ৪৭ বলে ৭৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে মোহাম্মদ আলীর শিকারে পরিণত হন তিনি। এরপর সেই ওভারেই একে একে ফিরিয়ে দেন আরাফাত সানি ও আলিস আল ইসলামকে। টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন এই পাকিস্তানি পেসার।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তোলে চিটাগং কিংস। বরিশালের হয়ে মোহাম্মদ আলী ছিলেন বোলিংয়ের নায়ক—৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে শিকার করেন ৫ উইকেট। কাইল মেয়ার্স নেন ২ উইকেট।

বরিশালের একাদশ ও ম্যাচের চিত্র

এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বরিশাল তিনটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে। একাদশে জায়গা ফিরে পান কাইল মেয়ার্স, মোহাম্মদ আলী ও তানভির ইসলাম। অপরদিকে, চিটাগং অপরিবর্তিত দল নিয়েই নামে।

বরিশালের একাদশ: তামিম ইকবাল, রিশাদ হোসেন, ডেভিড মালান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, ইবাদত হোসেন, কাইল মেয়ার্স, মোহাম্মদ নবি, তানভির ইসলাম, মোহাম্মদ আলী।

চিটাগংয়ের ১৪৯ রানের চ্যালেঞ্জ বরিশালের ব্যাটিং লাইনআপের জন্য কেমন কঠিন হয়ে দাঁড়ায়, সেটাই এখন দেখার বিষয়। তামিমদের সামনে ফাইনালে জায়গা করে নিতে প্রয়োজন ১৫০ রান।