ঢাকা, বুধবার, ৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১

অবসর নেওয়ার পরও সাকিবের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করলো বিসিবি

ক্রিকেট ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ অক্টোবর ০৪ ১১:৪১:০৯
অবসর নেওয়ার পরও সাকিবের নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণ করলো বিসিবি

সাকিবের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি থেকে হঠাৎ অবসর নেওয়ার বিষয়টি শুধুমাত্র দেশের ক্রিকেট নয়, বিশ্ব ক্রিকেটেও আলোচিত ঘটনা এটি। তাঁর অবসরের পেছনের কারণ এবং এর প্রভাবকে বিচার বিশ্লেষণ করলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক উঠে আসে। চলুন জেনে নেওয়া যাক।

অবসরের কারণ:সাকিব আল হাসান লম্বা সময় ধরে বাংলাদেশ দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে সব ফরম্যাটে খেলে এসেছেন। তিনি সব সময়ই বলেছেন যে, শারীরিক ও মানসিক চাপে ভুগছেন। যেহেতু ক্রিকেটের প্রতিটি ফরম্যাটের চাহিদা আলাদা আলাদা, তিন ফরম্যাটেই খেলার কারণে তার উপর শারীরিক চাপ বেড়ে যাচ্ছিল। এর প্রেক্ষিতে সাকিব দুই ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়ে নিজেকে সীমিত ওভার তথা ওয়ানডে ক্রিকেটে বেশি মনোনিবেশ করতে চান। তাঁর এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তিনি দীর্ঘমেয়াদে নিজের ক্যারিয়ারকে বাঁচিয়ে রাখতে চাইছেন এবং ব্যস্ত সূচির মাঝে কিছুটা সময় নিজের জন্য বের করতে চান।

আর্থিক প্রভাব:সাকিব আল হাসানের অবসরে তার মাসিক বেতন উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। বিসিবি তিন ফরম্যাটে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ক্রিকেটারদের বেতন দেয়। সাকিব সব ফরম্যাটে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন এবং তার মাসিক বেতন ছিল প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে টেস্টের জন্য ৪.৫ লাখ, ওয়ানডেতে ৪ লাখ এবং টি-টোয়েন্টির জন্য ৩.৫ লাখ।তিন ফরম্যাটের বেতন কেমন করে প্রদান করা হয়, সেটির নিয়মও নির্দিষ্ট:

-টেস্ট ফরম্যাটের জন্য পূর্ণ বেতন (১০০%)- ওয়ানডে ফরম্যাটের জন্য ৫০%- টি-২০ ফরম্যাটের জন্য ৪০%

যেহেতু সাকিব এখন শুধু ওয়ানডে ফরম্যাটেই খেলবেন, তাই এখন থেকে মাসিক বেতন পাবেন ৪ লাখ রুপি। উপরন্তু, সাকিবের অবসর তাদের বিভিন্ন ম্যাচ ফি এবং ফরম্যাট ভিত্তিক প্রণোদনা থেকেও বঞ্চিত করবে, যা তাদের আর্থিক আয়ের উপর বড় প্রভাব ফেলবে।

ভবিষ্যতের পরিকল্পনা: সাকিব শুধুমাত্র টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন, তবে তিনি ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার বাংলাদেশ দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তার অবসর ঘরোয়া ক্রিকেটে বিশাল শূন্যতা তৈরি করবে। সাকিব এই সময়ের মধ্যে তার ফিটনেস এবং পারফরম্যান্স বজায় রাখতে চান, যাতে তিনি এই বড় টুর্নামেন্টে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারেন।

ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ এবং ব্র্যান্ড ভ্যালু: সাকিব আল হাসানের মাঠে পারফরম্যান্সের পাশাপাশি তিনি বিজ্ঞাপন ও ব্র্যান্ডিং দুনিয়ায়ও একজন বড় মুখ। তাঁর জনপ্রিয়তা শুধু বাংলাদেশে নয়, আন্তর্জাতিক স্তরেও। যদিও তার কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে আয় কমে যাবে, তবে ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্ট এবং বিজ্ঞাপন থেকে আসা আয় তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। কারণ, সাকিবের ব্র্যান্ড ভ্যালু তার মাঠের বাইরেও স্থিতিশীল। তবে অবসরের পর তার খেলার উপস্থিতি কমে গেলে কিছু স্পন্সরশিপ চুক্তির ক্ষেত্রে তার আয়ের ধারা কিছুটা কমতে পারে।

সাকিবের অবসরের ক্রিকেটে প্রভাব:সাকিবের মতো একজন অভিজ্ঞ এবং বিশ্বমানের অলরাউন্ডারের অবসর বাংলাদেশের ক্রিকেটে বিশাল প্রভাব ফেলবে। টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে তার অবদান অতুলনীয়। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে, তিনি একজন ব্যাটসম্যান, বোলার এবং ফিল্ডার হিসেবে যে অবদান রেখেছেন, তা বাংলাদেশের ক্রিকেটকে উন্নতির পথে চালিত করেছে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও সাকিব একজন অগ্রণী খেলোয়াড় ছিলেন এবং বিশ্বকাপসহ বিভিন্ন টুর্নামেন্টে তিনি অসাধারণ পারফর্ম করেছেন।

সাকিবের অবসরের পর বাংলাদেশ দলে নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ করা কঠিন হতে পারে। সাকিব বিশেষ করে নতুন এবং তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য অনুপ্রেরণা এবং তাদের মধ্যে সাকিবের অভাব পূরণ করা কঠিন হবে।

সাকিবের অবসর ক্রিকেট সমর্থকদের মধ্যে হতাশাজনক, তবে একই সাথে অনেকেই তার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা এবং তার ক্যারিয়ারকে আরও ভালভাবে পরিচালনা করার ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



রে