ঢাকা, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২

আপত্তিকর ভিডিও প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শরীয়তপুরের ডিসি ও সংশ্লিষ্ট নারী

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২২ ১০:৪৩:৪২
আপত্তিকর ভিডিও প্রসঙ্গে মুখ খুললেন শরীয়তপুরের ডিসি ও সংশ্লিষ্ট নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক: সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন। ভিডিওটিতে তার সঙ্গে এক নারীর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের দৃশ্য ভাইরাল হলে নানা বিতর্ক ও গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়।

ভিডিওর সূত্র ধরে সামনে আসেন ওই নারী, টাঙ্গাইলের বাসিন্দা সেলিনা ইসলাম লিজা, যিনি বর্তমানে ঢাকার মিরপুরে স্বামী মাজহারুল ইসলাম সংগ্রামের সঙ্গে বসবাস করতেন। অভিযোগে তিনি বলেন, ডিসি আশরাফ উদ্দিন তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং পরবর্তীতে প্রতারণা করেন।

অন্যদিকে, ডিসি আশরাফ উদ্দিন তার অবস্থান পরিষ্কার করে বলেন, লিজা তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল করছিলেন এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ দাবি করছিলেন। তিনি দাবি করেন, চাহিদা অনুযায়ী টাকা না দেওয়ায় লিজা পুরনো ব্যক্তিগত ভিডিও ও ছবি ইচ্ছাকৃতভাবে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।

জানা যায়, ডিসির সঙ্গে লিজার পরিচয় ছিল পারিবারিক সূত্রে—ডিসি আশরাফ উদ্দিন ছিলেন লিজার স্বামীর বড় বোনের জামাই। এই পরিচয় থেকেই ঘনিষ্ঠতা এবং পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। অভিযোগ অনুযায়ী, ডিসির কথায় প্রভাবিত হয়ে লিজা তার স্বামীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেন। কিন্তু পরে ডিসি তাকে বিয়ে না করে বরং হুমকি দিতে শুরু করেন বলে লিজার দাবি।

লিজা আরও অভিযোগ করেন, প্রতিশ্রুতি না রাখায় তিনি এককালীন পাঁচ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ ও মাসিক খরচ দাবি করেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, ডিসি আশরাফ উদ্দিন তার সংসার ভেঙে দিয়েছেন এবং প্রতারণা করেছেন।

ডিসির দাবি, লিজা তাকে বারবার ব্ল্যাকমেইল করে টাকা আদায় করেছেন। এমনকি কয়েক দফায় ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থও দিতে বাধ্য হন তিনি। পরবর্তীতে একজন আইনজীবীর সহায়তায় লিজা আরও অর্থ দাবি করেন।

ঘটনার মীমাংসার চেষ্টা করেছিলেন শরীয়তপুরের একজন আইনজীবী। তিনি জানান, আলোচনার সময় ওই নারী বিয়েতে অনীহা প্রকাশ করে আর্থিক দাবি জানান। ডিসি কিছু অর্থ দিলেও পুরো টাকা না দেওয়ায় ভিডিও ছড়িয়ে দেন তিনি।

আইনজীবীর মতে, ব্যক্তিগত ভিডিও বা ছবি ছড়িয়ে দেওয়াটা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮ নম্বর ধারায় স্পষ্টতই শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ডিসি আশরাফ উদ্দিন ইতিমধ্যে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন শরীয়তপুরের ডিসি হিসেবে দায়িত্ব নেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের একজন কর্মকর্তা। বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে তিনি ছুটিতে রয়েছেন।

শরীয়তপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসলাম হোসাইন জানিয়েছেন, ডিসি আশরাফ উদ্দিন ছুটির আবেদন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়েছেন।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ