ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে অভিশপ্ত নারী

ধর্ম ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মে ১৫ ১১:৩৯:৫৪
ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে অভিশপ্ত নারী

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামের ইতিহাসে এমন কিছু চরিত্র রয়েছে, যাদের নাম আজও উচ্চারিত হয় ঘৃণা ও শিক্ষা হিসেবে। তারা শুধু নবীর বিরোধিতা করেনি, চেয়েছিল সত্য ও ন্যায়ের আলোকে চিরতরে নিভিয়ে দিতে। তেমনই একজন ছিলেন উম্মে জামিল—একজন নারী, যার নাম স্বয়ং কুরআনে চিরন্তন অভিশাপে লিপিবদ্ধ।

তিনি ছিলেন প্রভাবশালী কুরাইশ বংশের কন্যা এবং নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর চাচা, আবু লাহাবের স্ত্রী। সম্মান, বিত্ত, প্রভাব—সমস্ত কিছুই ছিল তার দখলে। কিন্তু তার অন্তর ছিল অহংকারে পূর্ণ, বিদ্বেষে অন্ধ, এবং ঘৃণায় পুড়ে ছাই।

যখন নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর বার্তা প্রচার শুরু করেন, তখন উম্মে জামিল সেই বার্তার প্রথম ও অন্যতম প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন। ইসলাম তার কাছে শুধু একটি ধর্ম ছিল না, ছিল তার সামাজিক মর্যাদা ও ক্ষমতার জন্য এক ভয়ানক হুমকি। তিনি বিশ্বাস করতেন, নবীর আহ্বান ছড়িয়ে পড়লে তার রাজত্ব শেষ হয়ে যাবে।

এই নারী শুধুমাত্র বিরোধিতা করেই থেমে থাকেননি—তিনি চক্রান্তে লিপ্ত হন। মক্কার বাজারে দাঁড়িয়ে প্রচার করতেন, “মুহাম্মদ এক যাদুকর, পাগল, মিথ্যাবাদী।” তিনি নারীসমাজকে উস্কে দিতেন নবী ও তাঁর স্ত্রী খাদিজার বিরুদ্ধে। গুজব ছড়ানো, অপবাদ রটানো—এসব ছিল তার প্রতিদিনের অস্ত্র।

উম্মে জামিলের শত্রুতা এতটাই গভীর ছিল যে, তিনি মাঝে মাঝে নবীর চলার পথে কাঁটা ছড়িয়ে দিতেন, সাহাবিদের হুমকি দিতেন, এমনকি নিজ হাতে পাথর তুলে নবীকে আঘাত করতে মসজিদ পর্যন্ত ছুটে গিয়েছিলেন। কিন্তু আল্লাহর হেফাজতে নবীকে সেই মুহূর্তে তিনি দেখতে পাননি।

আবু লাহাব ও উম্মে জামিল একত্র হয়ে ইসলামকে মুছে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরিণতি হলো বিপরীত—তাদের নামই হয়ে গেলো কিয়ামত পর্যন্ত কলঙ্কের প্রতীক। কুরআনের সূরা আল-মাসাদে তাদের অভিশপ্ত পরিণতির বর্ণনা এসেছে স্পষ্টভাবে—“তারা জ্বলন্ত আগুনে পোড়াবে, আর উম্মে জামিল গলায় মোটা দড়ি বেঁধে কাঠ বহন করবে।”

আবু লাহাব এক জঘন্য রোগে মারা যান, এতটাই ভয়ঙ্কর ছিল তার অবস্থা যে, মৃতদেহের কাছে যাওয়ার সাহসও কেউ করেনি। উম্মে জামিল তাকে একা ফেলে দিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তার নিজের মৃত্যুও হয়েছিল এক করুণ, অবমাননাকর অবস্থায়—কখনো বলা হয়, পাথরের নিচে চাপা পড়ে, আবার কেউ বলেন, দড়িতে শ্বাসরোধ হয়ে।

এই ঘটনা শুধু অতীত ইতিহাস নয়, এটি একটি সতর্কবার্তা। যখন অহংকার, ঘৃণা ও অন্যায়ের পথ বেছে নেওয়া হয়, যখন সত্যকে ধ্বংস করার চেষ্টা করা হয়—তার পরিণতি হয় ভয়াবহ, এই দুনিয়া ও আখিরাতে উভয় জগতেই।

মক্কার এই ক্ষমতাধর নারী এক সময় মানুষের ভয়ে কাঁপাতেন, কিন্তু তার অন্তরের অন্ধতা তাকে এমন গহ্বরে ফেলে দেয়, যেখান থেকে মুক্তি ছিল না। ইতিহাস আজও তাকে মনে রাখে—একজন নারী হিসেবে নয়, বরং 'জাহান্নামের মা' হিসেবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ