ঢাকা, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলে বিজয়ী কে হবে; বাস্তবতা যা বলছে

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মে ০৪ ১২:২৩:৫৫
ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হলে বিজয়ী কে হবে; বাস্তবতা যা বলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: "যদি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়, শেষ পর্যন্ত জয়ী কে হবে?"—এই প্রশ্নটি শুধু সামরিক শক্তির নিরিখে নয়, বরং এতে জড়িয়ে আছে পারমাণবিক সম্ভাবনা, অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গির মতো বহুস্তর বিশ্লেষণ। নিচে এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরা হলো:

১. সামরিক শক্তির তুলনা

ভারতের সেনাবাহিনী আকারে বৃহৎ এবং প্রযুক্তিগতভাবে অত্যন্ত উন্নত। তাদের রয়েছে আধুনিক যুদ্ধবিমান, বিমানবাহী রণতরী, স্যাটেলাইট নির্ভর নজরদারি ও দীর্ঘপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা।

অন্যদিকে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তুলনামূলক ছোট হলেও অত্যন্ত অভিজ্ঞ ও সুসংগঠিত। তারা চীন থেকে আধুনিক অস্ত্র ও প্রযুক্তি সহায়তা পায় এবং সীমান্ত সংঘর্ষে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।

সামরিক দিক দিয়ে ভারত কিছুটা এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানও সীমিত সংঘর্ষে তীব্র প্রতিরোধ গড়তে পারে।

২. পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা

দুই দেশই পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী। যুদ্ধ যদি পারমাণবিক পর্যায়ে গড়ায়, তবে তা দুই দেশেই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে আনবে, যাকে বলা হয় 'Mutually Assured Destruction' বা MAD।

এই বাস্তবতার কারণে পুরোপুরি যুদ্ধের সম্ভাবনা অনেক কম। বরং সীমিত সংঘর্ষ বা নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধের ঝুঁকি বেশি।

৩. অর্থনীতি ও রসদ সরবরাহ

ভারতের অর্থনীতি বর্তমানে অনেক বড় এবং স্থিতিশীল। তাদের রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ পরিচালনার সক্ষমতা ও রসদ সরবরাহের কাঠামো।

পাকিস্তান বর্তমানে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে এবং বহুলাংশে আইএমএফ, চীন ও মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশের সহায়তার উপর নির্ভরশীল।

এই কারণে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতে ভারতের সুবিধা বেশি।

৪. আন্তর্জাতিক সমর্থন ও কূটনীতি

ভারত আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বেশি গ্রহণযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ফ্রান্স ও ইসরায়েলের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রগুলো ভারতের মিত্র।

পাকিস্তান চীন ও কিছু মুসলিম দেশের সমর্থন পেলেও আন্তর্জাতিকভাবে ভারত বেশি প্রভাবশালী।

৫. আদর্শিক ও ধর্মীয় প্রেক্ষাপট

কিছু ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর মতে, পাকিস্তান একটি ইসলামি শক্তি হিসেবে কাশ্মীর ইস্যুতে ন্যায়ের পক্ষে লড়ছে এবং এই যুদ্ধ গাজওয়াতুল হিন্দের সূচনা হতে পারে।

তবে অধিকাংশ ইসলামি আলেম এই ব্যাখ্যার সঙ্গে একমত নন। তাদের মতে, ইসলাম শান্তি ও সমঝোতার পক্ষে।

সামরিক বা অর্থনৈতিক দিক থেকে হয়তো ভারত কিছুটা এগিয়ে, তবে যুদ্ধ শুরু হলে উভয় দেশই মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে। পারমাণবিক যুদ্ধ হলে তা শুধু দুই দেশের নয়, গোটা অঞ্চলের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে।

এই বাস্তবতায়, শান্তিপূর্ণ কূটনৈতিক সমাধানই একমাত্র টেকসই পথ।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ