ঢাকা, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাঁধ বানাচ্ছে বাংলাদেশ, কেঁপে উঠেছে ভারত

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৭ ২১:১৭:০৫
বাঁধ বানাচ্ছে বাংলাদেশ, কেঁপে উঠেছে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুহুরী নদীর পাড়ে নেমে এসেছে এক নিঃসঙ্গ নিরবতা। শুধু জলের কলকল শব্দ আর দূর থেকে ভেসে আসা পাখির ডাক—চেনা প্রকৃতি। কিন্তু এই শান্ত ছায়ার আড়ালে জমে উঠছে এক অদৃশ্য ঝড়, যার শব্দ এখনো সবার কানে পৌঁছায়নি। বাংলাদেশের বুক চিরে গড়ে উঠছে এক বাঁধ—শুধু কংক্রিটের দেয়াল নয়, যেন আত্মমর্যাদার এক অটল স্তম্ভ। প্রতিটি ইটে ভারতের কপালে যোগ হচ্ছে নতুন দুশ্চিন্তার রেখা।

এই নতুন অধ্যায়ের কেন্দ্রে আছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুস। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে সংগ্রামে বিশ্বজয়ী এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ, আজ দক্ষিণ এশিয়ার কূটনৈতিক দাবার ছকে ভারতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। শেখ হাসিনার উত্তরসূরি হিসেবে তার নেতৃত্বে গড়ে উঠছে এক ‘নতুন বাংলাদেশ’—যেখানে স্বাধীনতার সংজ্ঞাও বদলেছে।

ত্রিপুরা সীমান্তে অস্থিরতা বাড়ছে। এখনো বর্ষার পানি আসেনি, তবুও ভারত জেগে ঘুমাচ্ছে। কারণ এক বছর আগেই ত্রিপুরা যখন পূর্বঘোষণা ছাড়াই মুহুরী নদীর গেট খুলে দেয়, বাংলাদেশের একাধিক জেলা তলিয়ে গিয়েছিল পানিতে। লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরহারা হয়, ফসল হারায়, ক্ষতি হয় শত কোটি টাকার। তখন ভারত ছিল নীরব দর্শক।

এবার বাংলাদেশ জবাব দিচ্ছে—নিজস্ব ছন্দে, নিজস্ব শর্তে। মুহুরী নদীর তীরে যে বাঁধ নির্মাণ হচ্ছে, তা এখন ভারতের চোখে এক উদ্বেগের নাম। ত্রিপুরা প্রশাসন বলছে, এতে প্লাবনের আশঙ্কা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের ভয় কি সত্যিই জল নিয়ে, নাকি এটি রাজনৈতিক পাল্টাঘাতের আশঙ্কা?

ত্রিপুরা সরকার এরই মধ্যে পাঠিয়েছে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত দল, নেতৃত্বে পাবলিক ওয়ার্কস বিভাগের সচিব কিরণ গিত্তে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যেন আতঙ্কের ঢেউ ছড়িয়ে দিচ্ছে—বাংলাদেশ বুঝি বাঁধ নয়, সুনামি বানাচ্ছে! অথচ বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রকল্প একটি বার্তা বহন করে—"আমরা আর নত হই না।"

দীর্ঘদিন ধরে ভারত একের পর এক বাঁধ নির্মাণ করে বাংলাদেশের জলসীমায় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে—ফারাক্কা, তিস্তা থেকে শুরু করে ছোট বড় অসংখ্য প্রকল্প। বাংলাদেশের কৃষি, জীবন, ও নদী ব্যবস্থাপনা তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বারবার। আজ যখন বাংলাদেশ আত্মরক্ষার পদক্ষেপ নিচ্ছে, তখন কেন ভারত এমন অস্বস্তিতে?

এই বাঁধ যেন ভারতের আধিপত্যবাদের মুখে এক প্রত্যুত্তরের ঘা। আর ড. ইউনুস এখন শুধুই অর্থনীতিবিদ নন, তিনি হয়ে উঠেছেন দক্ষিণ এশিয়ার নতুন রাজনৈতিক স্তম্ভ—যার একেকটি চাল মোদিকে ফেলছে চাপে। কূটনৈতিক দাবার এই বোর্ডে, জল নয়, চালটাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র।

মুহুরী নদীর এই বাঁধ তাই শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়। এটি বাংলাদেশের সাহস, নতজানু কূটনীতির অবসান। আজ বাংলাদেশ চোখে চোখ রেখে কথা বলছে। আর ভারত—সে যেন উদ্বিগ্ন, বিস্মিত প্রতিবেশী।

ত্রিপুরা থেকে আসা প্রতিনিধি দল, মিডিয়ার শোরগোল—সব যেন এক অদৃশ্য আতঙ্কের প্রতিধ্বনি। এই বাঁধ কি সত্যিই প্লাবন আনবে? নাকি এটি বাংলাদেশের আত্মপরিচয়ের নতুন প্রতীক হয়ে উঠবে?

গল্পের শেষ এখনো লেখা হয়নি। বর্ষা আসবে, জল নামবে। কিন্তু সেই জল এবার ইতিহাসের অংশ হবে কিনা—তা নির্ভর করছে সাহস আর সঠিক নেতৃত্বের ওপর।

ড. ইউনুস এখন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতির নিঃশব্দ খেলোয়াড়, যার প্রতিটি পদক্ষেপই বদলে দিচ্ছে খেলার নিয়ম। এবং এই খেলায় জয়ী হচ্ছে বাংলাদেশ—নতুন এক কণ্ঠে, নতুন আত্মবিশ্বাসে।

রাকিব/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ