সদ্য সংবাদ
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সংকট: নতুন নেতৃত্বের খোঁজে দল

নিজস্ব প্রতিবেদক: ৭৬ বছরের পুরনো রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ এখন এক অনিশ্চিত সময় পার করছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানোর পর দলটি গভীর নেতৃত্ব সংকটে পড়েছে। একসময় বাংলাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে পরিচিত দলটির বহু শীর্ষ নেতা বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন, ফলে দেশীয় রাজনীতিতে দলটি কার্যত নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়েছে।
৫ আগস্টের গণআন্দোলনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অনেক শীর্ষ নেতা দেশত্যাগ করেন—কেউ ভারতে, কেউবা ইউরোপ-আমেরিকায় আশ্রয় নেন। দেশের ভেতরে থেকে দল চালানো হয়ে পড়ে কঠিন। অনেক নেতাকর্মী গা-ঢাকা দিয়েছেন, কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়েছেন, অনেকে আবার আত্মগোপনে।
এই প্রেক্ষাপটে বিদেশে থাকা নেতারা মনে করছেন, দেশে একজন সাহসী, দৃঢ়চেতা নেতৃত্বের প্রয়োজন, যিনি সংগঠনকে আবারও শক্তিশালী করতে পারবেন। আলোচনায় উঠে আসছে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরীর নাম। তবে রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের আশঙ্কায় কেউই এখনও প্রকাশ্যে আসতে সাহস পাচ্ছেন না।
দলীয় সূত্র বলছে, কারও নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করলে তিনি সরকারি দমননীতির শিকার হতে পারেন, এই শঙ্কায় দল এখনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত থেকে বিরত রয়েছে।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সীমিত কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমভিত্তিক প্রচারণা ও দিবসভিত্তিক অনুষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ। মাঠপর্যায়ের সংগঠনের সঙ্গে বাস্তব সংযোগ নেই বললেই চলে।
তবে তৃণমূলের অনেক কর্মী এখনো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখছেন এবং সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করছেন।
এর মাঝেও অনেক নেতা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ওপর অটল। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আমরা ঘুরে দাঁড়াব। বিকল্প নেতৃত্বের কোনো প্রশ্নই আসে না।”
তবে রাজনৈতিক বাস্তবতা ভিন্ন ইঙ্গিত দিচ্ছে। গণঅভ্যুত্থানের পর গড়ে ওঠা নতুন রাজনৈতিক জোট ও ছাত্র নেতৃত্বাধীন এনসিপির মতো দলগুলো আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি তুলছে।
ফলে দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন দিনদিন ঘনীভূত হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হতে পারে, আবার কারও ধারণা, আন্তর্জাতিক চাপের ফলে সামনে একটি রাজনৈতিক সুযোগ তৈরি হতে পারে।
দলের পুরনো জোটসঙ্গী ১৪ দল, জাতীয় পার্টি ও অন্যান্য প্রগতিশীল দলের বহু নেতাই এখন কারাগারে বা আত্মগোপনে। ফলে আওয়ামী লীগ এখন কার্যত রাজনৈতিকভাবে একাকী।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাঈদ ইফতেখার আহমেদ মনে করেন, “দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার ফলে আওয়ামী লীগ জনগণের সঙ্গে বাস্তব সংযোগ হারিয়ে ফেলেছে। অভ্যন্তরীণভাবে দলটি সুবিধাবাদ, দুর্নীতি ও বিচ্ছিন্নতার জালে আটকে গেছে।”
তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলটির পক্ষে আবারও রাজনৈতিকভাবে পুনরুত্থান সহজ হবে না।
নেতৃত্বহীনতা, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্নতা এবং রাজনৈতিক নিঃসঙ্গতার মধ্যেই আওয়ামী লীগ এখন টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের বাইরে থাকা নেতারা মাঠে নেতৃত্ব দিতে পারছেন না, আর দেশের ভেতরে কেউ সাহস করে সামনে আসতেও পারছেন না।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে—আওয়ামী লীগ কি আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? নাকি দলটির অস্তিত্বই ইতিহাসের পাতায় মিলিয়ে যাবে?
গণি/
আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ
- বাংলা ৬ সিনেমায় বাস্তবেই সহবাস করতে হয়েছে নায়ক-নায়িকার
- দেশের বাজারে কমলো জ্বালানি তেলের দাম
- আব্দুস সাত্তার ও মেয়ে শেফা– আলোচিত ঘটনার নেপথ্যে উঠে এলো নতুন তথ্য
- মিশা সওদাগরকে রাস্তায় মারধর? আসল ঘটনা কী বলছে
- ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ আসছে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে বাংলাদেশের যে অঞ্চল
- পাল্টা হামলায় কত সেনা হারাল ভারত, অবশেষে তথ্য দিল দিল্লি
- একই বিছানায় দুই স্ত্রী নিয়ে ঘুমানো কি ইসলামসম্মত
- বাংলাদেশকে চিঠি দিয়ে যা জানালো আমেরিকা
- সরকারি চাকরিজীবীদের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মহার্ঘ ঘোষণা
- “আমরাই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত”: সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের দাবি
- এএসপি পলাশকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য প্রকাশ করলেন তার বোন ও দুলাভাই
- বাংলাদেশে ঈদুল আজহার তারিখ ঘোষণা : কতদিন সরকারি ছুটি থাকবে
- শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইতিহাসে প্রথম তদন্ত সম্পন্ন
- আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পর যা বলছে ভারত
- পাকিস্তানের সেনাপ্রধান গ্রেপ্তার! ভেতরের সত্য যা জানা গেল