ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

কেন শুনে বুঝে কেন বেঁচে বেঁচে মারা হল

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৩ ২১:১৯:৫৬
কেন শুনে বুঝে কেন বেঁচে বেঁচে মারা হল

নিজস্ব প্রতিবেদক: কাশ্মীরের পেহেলগাঁও—হিমালয়ের কোলে নিসর্গে ঘেরা এক ছবির মতো শহর। পর্যটকের চোখে এক টুকরো স্বর্গ, যাকে ‘ভারতের সুইজারল্যান্ড’ বলা হয়। কিন্তু সেই স্বপ্নভূমি রূপ নিল বিভীষিকার শহরে। মঙ্গলবার বিকেলে, এক নির্মম বাস্তবতায় থমকে গেল শান্ত পেহেলগাঁওর প্রাণচাঞ্চল্য। মুহূর্তেই আনন্দের মুখগুলোতে ছায়া নামিয়ে আনল সশস্ত্র সহিংসতা।

সেদিন সন্ধ্যা নামার আগেই হামলাকারীরা হানা দেয় পর্যটকে ভরা এলাকায়। তারা গুলি চালায় না শুধু—প্রথমে জিজ্ঞাসা করে, "তোমার নাম কী?" তারপরই বেছে নেয় টার্গেট। নাম শুনেই চিনে নেয় কে হিন্দু, আর তাকেই মারে গুলি। এক ভয়ঙ্করভাবে পরিকল্পিত, ধর্মীয় বিদ্বেষপ্রসূত এই হত্যাযজ্ঞে অন্তত ২৭ জন প্রাণ হারান।

নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুজন বিদেশি—একজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের নাগরিক, অন্যজন নেপালের। ভারতীয় নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তা নিহত হন এই নৃশংসতায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষায়, খুব কাছ থেকে একের পর এক গুলি চালানো হয়। পুরুষদের লক্ষ্য করে হামলা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। নারীরা অনেকেই প্রাণে বেঁচে যান, তবে রক্তের ছাপ নিয়ে ফিরে যান আতঙ্কের গভীর ছায়ায়।

এই ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামের একটি চরমপন্থী গোষ্ঠী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা বলেছে, “এই হামলা ছিল পূর্বপরিকল্পিত প্রতিশোধ।” ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি একে ‘বর্বরতা’ বলে নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এই রক্তের মূল্য দিতে হবে। অপরাধীরা আইনের আওতায় আসবেই।”

২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মীরে এটি অন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। সরকার ইতোমধ্যে উপত্যকা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। দিল্লি পর্যন্ত নজরদারি কড়া করা হয়েছে। পর্যটন কেন্দ্র, ধর্মীয় স্থানসহ সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

এই বর্বরতা ঘিরে জেগেছে অনেক প্রশ্ন। অমরনাথ যাত্রার ঠিক আগমুহূর্তে এই হামলার পেছনে কি রয়েছে নতুন করে কাশ্মীরকে অস্থির করার পরিকল্পনা? ধর্মীয় বিভাজনের মাধ্যমে কি আবার অশান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা?

এখন কাশ্মীর শুধু রক্তাক্ত নয়, এক নতুন আতঙ্কে আচ্ছন্ন। আর গোটা ভারত ডুবে আছে শোক, ক্ষোভ ও প্রতিশোধের প্রতিজ্ঞায়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ