সদ্য সংবাদ
“আবার ক্ষমতা পেলে কোথায় যাবে” রাজনীতিতে উত্তপ্ত ভাষা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যেন এখন শুধু বিচারের মঞ্চ নয়, হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক উত্তেজনার নতুন কেন্দ্র। সাম্প্রতিক ঘটনায় একের পর এক বিতর্কিত আচরণ, হুমকি আর শিষ্টাচারবর্জিত বক্তব্যে নড়েচড়ে বসেছে গোটা জাতি।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল হাসান, যিনি ‘হাসিনার কসাই’ নামে পরিচিত, প্রকাশ্যে পুলিশের প্রতি হুমকি দিয়েছেন একটি ভিডিওতে। তার মন্তব্য—“আবার ক্ষমতায় ফিরলে তখন কোথায় যাবে?”—নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ভাষা নিয়ে।
অন্যদিকে, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে যেখানে তিনি পুলিশের প্রতি অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করছেন। বিষয়টি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।
রবিবার, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আরেকটি নাটকীয় দৃশ্যের জন্ম দেন সাবেক মন্ত্রী শাহজাহান খান। একাধিকবার হেলমেট খুলে ফেলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। উপস্থিত ছিলেন জোটসঙ্গী রাশেদ খান মেনন এবং হাসিনার সাবেক মন্ত্রী ইনু, যিনি উত্তপ্ত কণ্ঠে বলেন, “দিন আমাদেরও আসবে।” উত্তেজনা তখন চূড়ায় পৌঁছে যায়।
এই ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমে বলেন, “শাহজাহান খান, ইনু সহ বেশ কয়েকজন নেতার আচরণ বিচারপ্রক্রিয়ার জন্য চরম অবমাননাকর। এটি কখনোই কাম্য নয়।”
তবে প্রশ্ন উঠছে—এমন উদ্ধত আচরণের উৎস কোথায়? অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, রাজনৈতিক দোলাচল আর ভারতের ভূমিকাকে কেন্দ্র করে কিছু নেতার মধ্যে আবার ক্ষমতায় ফেরার আশার স্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠেছে। ফলে তারা বিচারপ্রক্রিয়াকেও যেন অশ্রদ্ধার চোখে দেখতে শুরু করেছেন।
এদিকে, কারাগারেও চলছে বিতর্ক। অভিযোগ উঠেছে, শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক ও শাহজাহান খান কারাগারে পাচ্ছেন বিশেষ সুবিধা। তথ্য অনুযায়ী, বাইরে থেকে আসছে প্রিমিয়াম খাবার, আর আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছেন নিয়মের বাইরে গিয়ে।
এই পরিস্থিতিতে গঠন করা হয়েছে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন—এই তদন্ত আসলেই কি কিছু বদলাবে, নাকি এটাও শুধু লোক দেখানো আইওয়াশ?
দেশ এখন এক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে রাজনীতি আর বিচারপ্রক্রিয়ার মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
–সোহাগ/