ঢাকা, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশে মিলেছে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তৈরির মূল্যবান খনিজ

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ১৯ ২০:৩৮:৪৭
বাংলাদেশে মিলেছে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন তৈরির মূল্যবান খনিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: যে বিরল খনিজ সম্পদকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে ঠান্ডা লড়াই চলছিল, সেই দামী খনিজের সম্ভাব্য মজুত এবার মিলেছে বাংলাদেশে। আর এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে কূটনৈতিক তৎপরতা—বিশ্বশক্তিগুলো চাইছে বাংলাদেশকে নিজেদের প্রভাববলয়ে আনতে।

ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে আগে থেকেই গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ। এবার এই খনিজ আবিষ্কারের সম্ভাবনা দেশটির গুরুত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে প্রতিবেশী ভারতের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়েছে, কারণ অর্থনীতির পাশাপাশি খনিজ সম্পদেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে দ্রুত গতিতে।

কিছুদিন আগেও বাংলাদেশকে ভারত অনেকখানি ছোট চোখে দেখত। কিন্তু সময় বদলেছে। আজকের বাংলাদেশ শুধু ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ নামে পরিচিত নয়, বাস্তব ক্ষেত্রেও এক নতুন উত্থানের পথে। একসময় গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনুসের সাফল্য নিয়ে গর্ব করত দেশটি, আর এখন যুক্ত হয়েছে লিথিয়াম, ইউরেনিয়াম, থোরিয়ামসহ নানা দামী ও বিরল খনিজের সন্ধান।

বিপুল গুরুত্ব রয়েছে এই খনিজগুলোর—বিশ্ববিখ্যাত প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা Apple-এর iPhone থেকে শুরু করে সামরিক ড্রোন, মিসাইল সিস্টেম এবং আধুনিক ইলেকট্রনিকস পণ্য তৈরিতে এসব খনিজের বিকল্প নেই। এতদিন এসব খনিজের প্রধান উৎস ছিল চীন। কিন্তু সম্প্রতি চীন ঘোষণা দিয়েছে, তারা বিরল মৃত্তিকা ধাতুর রপ্তানি সীমিত করবে। নিউইয়র্ক টাইমস-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, চীনা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনেক শিপমেন্ট আটকে দিয়েছে নিজস্ব বন্দরেই।

ফলে, চীন থেকে আমদানি বন্ধ হয়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের প্রযুক্তি ও প্রতিরক্ষা খাতে বড় ধরনের ঘাটতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলাদেশের খনিজ সম্ভাবনাকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে আগ্রহ বাড়ছে।

বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশের নদীর বালু ও উপকূলীয় এলাকায় দীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণায় ল্যান্থানাইড, স্যামারিয়াম, ইউরেনিয়াম, গ্যাডোলিনিয়াম, টারবিয়াম, ও ডিসপ্রোসিয়ামের মতো মূল্যবান মৌলের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। যমুনা, তিস্তা, ধরলা, ও মেঘনার বালুতে এসব খনিজের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। প্রতি কেজি বালুতে এসব মৌলের পরিমাণ ৬০ থেকে ১৭৬ মিলিগ্রাম পর্যন্ত।

তাছাড়া, সিলেট, সুনামগঞ্জ এবং ময়মনসিংহের পাহাড়ি অঞ্চলের পলিমাটি ও নদীর তলদেশেও রয়েছে তেজস্ক্রিয় ও দুর্লভ খনিজের সম্ভাবনা।

এই সম্পদের সঠিক ও পরিকল্পিত ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশ কেবল অর্থনৈতিকভাবে নয়, কৌশলগতভাবেও বিশ্বের সামনে একটি গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। তবে এর জন্য দরকার দূরদর্শী রাষ্ট্রীয় কৌশল এবং আন্তরিক দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

সোহাগ/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ