৩০০ আসন নিয়ে নির্বাচনে নিবন্ধনের জন্য যে কঠিন শর্তের মুখে জাতীয় নাগরিক পার্টি

বাংলাদেশে যেকোনো নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন পেতে হলে কিছু কঠিন শর্ত পূরণ করতে হয়। এসব শর্ত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী আরোপিত থাকে। যদিও কিছু শর্ত এখন আর কার্যকর নেই, যেমন স্বাধীনতার পর থেকে কোনো একটি সংসদীয় আসনে দলীয় প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হতে হবে—এই শর্তটি এখন কাগজে থাকলেও বাস্তবে প্রয়োগ হয় না। এটি ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু হওয়ার সময় প্রযোজ্য ছিল, তবে বর্তমানে অনেক শর্তই নতুন দলগুলির জন্য কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং হয়ে উঠেছে।

নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য যে শর্তগুলো রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো—নূনতম ২১টি জেলা ও ১০০টি উপজেলায় কমিটি এবং অফিস স্থাপন করতে হবে। এছাড়া, প্রতিটি উপজেলা বা থানায় অন্তত ২০০ জন সদস্য থাকতে হবে। এসব শর্ত নতুন দলগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নির্বাচন কমিশন বা অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন হয়, তবে অক্টোবরে তফসিল ঘোষণা করা হবে। তফসিল ঘোষণা হলে, নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে সেই অনুযায়ী।

এদিকে, ২৮ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর মানিক মিয়া এভিনিউতে নতুন রাজনৈতিক দল "জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)" আত্মপ্রকাশ করেছে। এনসিপির সামনে এখন নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবে দলের মুখ্য সংগঠক জানিয়েছেন, তারা নিবন্ধনের শর্তগুলো পূরণ করতে সক্ষম হবেন। তিনি বলেন, "আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের এক তৃতীয়াংশ জেলাতে কমিটি এবং ১০০টিরও বেশি উপজেলা কমিটি থাকবে, এবং আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শর্তগুলো পূর্ণ করতে পারব।"

রাজনীতি সত্যিই চ্যালেঞ্জিং, এবং এতে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হয়। তবে, এনসিপির শীর্ষ নেতা আশাবাদী যে দলটি ৩০০ আসনে নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুত থাকবে। তিনি বলেন, "আমরা ৩০০ আসনকেই টার্গেট করেছি, কারণ আমাদের কাছে জনগণের সমর্থন রয়েছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে।"

এনসিপি কোন জোটে যোগ দেবে বা তাদের নেতৃত্বে নতুন কোনো জোট গঠন হবে, সেটা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে চূড়ান্ত করা হবে।

এনসিপির শীর্ষ নেতা আরও বলেন, "নির্বাচন পরিচালনা করতে হলে স্বচ্ছতা এবং ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করতে হবে, এবং আমরা সেই পথে এগিয়ে যাব।"

তবে, নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে কোনো ধরনের শিথিলতা দেখা দিলে, দলটি নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করতে ৩ মাসের বেশি সময় নিবে না, এবং সম্ভাবনা থাকলে তারা আগামীর নির্বাচনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করছে।