ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২

শেখ হাসিনার পতনের আগমুহূর্তে তাঁর মূল পরিকল্পনা কী ছিল

জাতীয় ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ জুন ২৪ ২৩:০১:০৫
শেখ হাসিনার পতনের আগমুহূর্তে তাঁর মূল পরিকল্পনা কী ছিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে শেখ হাসিনার দীর্ঘ শাসনকাল এক বিশেষ অধ্যায়। প্রায় দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এই সরকার নানা সাফল্য, বিতর্ক, এবং রাজনৈতিক বিরোধিতার মধ্য দিয়ে পথ চলেছে। এখন যখন তাঁর শাসনের শেষপ্রান্ত নিয়ে আলোচনা চলছে, তখন সামনে আসছে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন—পতনের আগে শেখ হাসিনার প্রকৃত রাজনৈতিক ও কৌশলগত পরিকল্পনা কী ছিল?

দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থাকার কারণে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামো, বিচারব্যবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর দৃঢ় নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। বিশেষ করে সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে তিনি এমন এক শাসনব্যবস্থা গড়েন, যেখানে বিরোধী রাজনীতি কার্যত সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।

বিশ্লেষকদের মতে, তাঁর অন্যতম লক্ষ্য ছিল রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিশ্চিত করা। অনেকের ধারণা, তিনি তাঁর কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে আনার পরিকল্পনা করছিলেন। পুতুলের আন্তর্জাতিক সংস্থায় সম্পৃক্ততা এবং বিভিন্ন সরকারি ও কূটনৈতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি এই পরিকল্পনারই ইঙ্গিত বলে মনে করা হয়।

শুধু সামরিক কিংবা প্রশাসনিক নয়, শেখ হাসিনার অন্যতম বড় হাতিয়ার ছিল তথ্য ও প্রযুক্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ একাধিক আইনি কাঠামোর মাধ্যমে তিনি বিরোধী কণ্ঠকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেছেন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সীমিত করে রাষ্ট্রীয় বয়ানকে এককভাবে প্রতিষ্ঠা করাও ছিল তাঁর শাসনকৌশলের একটি বড় দিক।

অভ্যন্তরীণ কৌশলের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্কেও তিনি সচেতন ভূমিকা পালন করেছেন। ভারত, চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত চুক্তি করে তাঁর সরকার টিকিয়ে রাখার কূটনৈতিক ভিত্তি গড়ার চেষ্টা করেছে। তবে পশ্চিমা দেশগুলো, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রশ্নে চাপ বাড়তে থাকলে সেই কূটনৈতিক ভারসাম্য বিপন্ন হতে শুরু করে।

সব মিলিয়ে, শেখ হাসিনার শেষদিকে তাঁর মূল পরিকল্পনা ছিল—ক্ষমতা ধরে রাখা, পরিবারভিত্তিক উত্তরাধিকার গড়ে তোলা, বিরোধী শক্তিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা, এবং আন্তর্জাতিক মহলে অবস্থান সুরক্ষিত করা। তবে এই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাই হয়তো শেষপর্যন্ত জনগণের বিরক্তি, বিদেশি সমালোচনা এবং রাজনৈতিক চাপের জন্ম দিয়ে পতনের পথ তৈরি করেছে।

– প্রতিবেদক, সিদ্দিকা/

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

২০২৬ বিশ্বকাপে কি ইরান খেলতে পারবে না!

নিজস্ব প্রতিবেদক: মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক উত্তাপ এবার ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনেও। ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্রের সক্রিয় অবস্থান বিশ্বকাপ ফুটবলকে ঘিরে একটি গুরুত্বপূর্ণ... বিস্তারিত