ঢাকা, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

এটা ভারত সরকারের ‘পরিকল্পিত নাটক’

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ এপ্রিল ২৫ ১৭:২৭:৩৮
এটা ভারত সরকারের ‘পরিকল্পিত নাটক’

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারত-শাসিত কাশ্মীরে সাম্প্রতিক সশস্ত্র হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের পরতে পরতে। ঘটনায় বহু প্রাণহানি ঘটেছে, যার রেশ এখন ছড়িয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতেও। পাকিস্তান সরাসরি দাবি করছে—এটি একটি 'পরিকল্পিত ও সাজানো নাটক', যার মূল কুশীলব ভারতের নিজস্ব শাসকগোষ্ঠী।

আল জাজিরা প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, “কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর এই হামলা ছিল একটি ‘ফলস ফ্ল্যাগ অপারেশন’। অর্থাৎ, ভারত নিজেরাই এই হামলা ঘটিয়ে দায় চাপাতে চায় পাকিস্তানের ওপর।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এই হামলার সঙ্গে পাকিস্তানের কোনো সম্পর্ক নেই। কাশ্মীরে চলমান কোনো আন্দোলন বা সশস্ত্র গোষ্ঠীকে আমরা সমর্থন করি না।”

ভারত অবশ্য দাবি করছে, হামলার পেছনে রয়েছে পাকিস্তান-সমর্থিত জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত। কিন্তু পাকিস্তান এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “ভারতের প্রতিক্রিয়া ছিল শিশুসুলভ, এতে কূটনৈতিক পরিণতির চেয়ে বেশি প্রকাশ পায় রাজনৈতিক নাটকীয়তা।” তিনি অভিযোগ করেন, “প্রতিবারই কোনো ঘটনা ঘটলেই ভারত সরাসরি পাকিস্তানকে দোষারোপ করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু এবার আমরা শক্তভাবে জবাব দেব।”

এই হামলা আবারও সামনে এনেছে কাশ্মীরের দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক ও মানবিক সংকট। ১৯৮৯ সাল থেকে ভারত-শাসিত কাশ্মীরে শুরু হওয়া বিদ্রোহে অংশ নিয়েছেন হাজারো মানুষ—যাদের বড় অংশই কাশ্মিরি মুসলমান। তাঁদের দাবি, কাশ্মীর হয় পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্ত হোক, না হয় স্বাধীন হোক। ভারত একে দেখে 'পাকিস্তান-সমর্থিত সন্ত্রাসবাদ' হিসেবে, আর পাকিস্তান বলছে—এটি ‘একটি বৈধ স্বাধীনতাকামী আন্দোলন’।

বিগত কয়েক দশকে এই সংঘাতে প্রাণ গেছে হাজারো মানুষের—বেসামরিক নাগরিক, বিদ্রোহী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদের।

এই সাম্প্রতিক হামলাকে কেবল আরেকটি সহিংস ঘটনা হিসেবে দেখলে ভুল হবে। বরং এটি দুই প্রতিবেশী দেশের পারস্পরিক অবিশ্বাস, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং কাশ্মীর সমস্যার জটিল বাস্তবতারই প্রতিফলন। কূটনীতিকরা বলছেন, যতদিন না কাশ্মীর সংকটের মূল রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে বের করা হয়, ততদিন এই ধরনের ঘটনা বারবারই ফিরে আসবে, এবং প্রতিবারই তা দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের উত্তাপ আরও বাড়িয়ে তুলবে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ