ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৩ ভাদ্র ১৪৩২

ভারতের ভিতরে নতুন রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলন: মোদী সরকারের কঠিন চ্যালেঞ্জ

বিশ্ব ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৫ মার্চ ০৭ ২২:৪৮:৩৪
ভারতের ভিতরে নতুন রাষ্ট্র গঠনের আন্দোলন: মোদী সরকারের কঠিন চ্যালেঞ্জ

ভারত এখন গভীর সংকটের মধ্যে রয়েছে। দেশটি একদিকে যেন ঘেরাও হয়ে আছে, কোথাও শান্তি নেই, ভিতরে এবং বাইরে পরিস্থিতি অস্থির। প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক ভালো নয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাথেও সম্পর্ক তেমন সন্তোষজনক নয়। দেশের ভিতরে "সেভেন সিস্টার্স" নামে পরিচিত সাতটি উত্তর-পূর্ব রাজ্য আলাদা রাষ্ট্র গঠনের দাবি তুলছে, এবং পাকিস্তানের সাথে কাশ্মীর সমস্যা আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এর পাশাপাশি, খালিস্তান আন্দোলনও নতুন করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এসব মিলিয়ে ভারতের পরিস্থিতি চরম বিপদের মুখে।

এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর লন্ডন সফরের সময় একটি অপ্রত্যাশিত ঘটনার সম্মুখীন হন। চ্যাথাম হাউস থিঙ্ক ট্যাঙ্কের এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর, গাড়িতে ওঠার সময় এক ব্যক্তি ভারতের পতাকা নিয়ে ছুটে এসে সেটি ছিঁড়ে ফেলে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে গাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়ে ভারতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলছে, আর পুলিশ তাকে সরাতে চেষ্টা করছে। এ সময় খালিস্তানিরা স্লোগান দিয়ে প্রতিবাদ জানাতে থাকে, এবং পুরো ঘটনা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ভারত সরকার এই ঘটনাকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে মনে করছে, কারণ মন্ত্রীর কনভয়ের সামনে নিরাপত্তা ব্যারিকেড ভেঙে ভারতীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী এই ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

খালিস্তান আন্দোলন, যা শিখদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের দাবিতে শুরু হয়েছিল, ভারত জন্য একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের পাঞ্জাব অঞ্চলে এবং পাকিস্তানের পাঞ্জাব অঞ্চলে ষোড়শ শতকে শিখ ধর্মের পথচলা শুরু হয়েছিল। ১৯৪৭ সালের ভারত-পাকিস্তান বিভাজনের সময় পাঞ্জাবও দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। ১৯৮০-এর দশকে পাঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলন ব্যাপক আকার ধারণ করে, এবং এতে সহিংসতা বেড়ে যায়। ১৯৮৪ সালে, ভারতীয় সেনাবাহিনী স্বর্ণমন্দিরে অভিযান চালালে সেখানে ব্যাপক রক্তপাতে অনেক মানুষ নিহত হয়। সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন, এবং তার কয়েক মাস পরেই শিখ দেহরক্ষীদের হাতে নিহত হন।

এই আন্দোলন এরপরও থামেনি, এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত এই আন্দোলন নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছে। সম্প্রতি কানাডায় খালিস্তান আন্দোলনের প্রধান নেতা হরদ্বীপ সিংয়ের হত্যাকাণ্ডের পর, মোদি সরকার সরাসরি অভিযুক্ত হয়। এই ঘটনায় ভারত-কানাডা সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং দুই দেশের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

মোটকথা, ভারতের জন্য এই মুহূর্তে ভিতরে এবং বাইরে চ্যালেঞ্জের শেষ নেই। মোদি সরকারের সামনে এখন সবচেয়ে বড় পরীক্ষা, কিভাবে এই আন্দোলন ও অস্থিরতা ঠেকানো যায়, এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ