ঢাকা, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

গোপন তথ্য ফাঁস: জানা গেল যে কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নেয়নি আইপিএলের দল গুলো

ক্রিকেট ডেস্ক . ২৪ নিউজ
২০২৪ নভেম্বর ২৭ ১১:২৪:০৬
গোপন তথ্য ফাঁস: জানা গেল যে কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের নেয়নি আইপিএলের দল গুলো

আইপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা চলছে, কিন্তু এবার সেই চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। চলতি আইপিএল নিলামে সাকিব আল হাসান এবং মুস্তাফিজুর রহমানের মতো তারকাদের নাম থাকা সত্ত্বেও তাদের জন্য কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি আগ্রহ দেখায়নি। বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে হতাশা তো তৈরি হয়েছে, তবে প্রশ্ন উঠছে— কেন এমনটি ঘটছে?

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএলে না পাওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের শীতলতা উঠে আসছে। বিশেষ করে গত কয়েক বছরে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক ইস্যুতে টানাপোড়েন বেড়েছে। এসব বিষয় আইপিএলেও প্রভাব ফেলেছে বলে অনেকের ধারণা। ভারতীয় কট্টরপন্থী সংগঠন, যেমন হিন্দু মহাসভা, বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএলে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেছে, যা ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর সিদ্ধান্তে কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএলে সফলতা অতীতে খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। মোহাম্মদ আশরাফুল এবং মাশরাফি বিন মুর্তজার মতো বড় নামের খেলোয়াড়রা আইপিএলে অংশ নিলেও তাদের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। আশরাফুল ১০ বলে ২ রান করেছিলেন, আর মাশরাফি একটি ম্যাচের শেষ ওভারে ২৬ রান খরচ করেছিলেন, যা দলের পরাজয়ে পরিণত হয়েছিল। এই ধরনের পারফরম্যান্সের পর ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের প্রতি আস্থা কমে গেছে।

তবে সাকিব আল হাসান এবং মুস্তাফিজুর রহমানের ক্ষেত্রে অবস্থা কিছুটা ভিন্ন। সাকিব কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে দুটি আইপিএল শিরোপা জিতেছেন এবং অলরাউন্ডার হিসেবে তার পারফরম্যান্স অতুলনীয়। মুস্তাফিজুর রহমানও তার প্রথম আইপিএল মৌসুমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলেন, যা তাকে আইপিএলের সেরা বোলারদের একজন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আইপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো বিসিবির (বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড) কঠোর নীতি। বিসিবি প্রায়শই আন্তর্জাতিক সূচির কারণে ক্রিকেটারদের পুরো মৌসুমের জন্য অনাপত্তিপত্র (NOC) দেয় না। তাসকিন আহমেদ, যিনি আইপিএলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন, দুইবারই বোর্ডের বাধার মুখে পড়ে খেলতে পারেননি। এই বাধার কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মনে বাংলাদেশি খেলোয়াড়দের প্রতি আগ্রহ কমেছে।

আইপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ শুরু হয় ২০১০ সালে, যেখানে মোহাম্মদ আশরাফুল এবং মাশরাফি বিন মুর্তজা প্রথম সুযোগ পান। কিন্তু এরপর থেকেই বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আইপিএলে খেলার সুযোগ কমতে থাকে। ২০২৩ সালে লিটন দাস আইপিএলে সুযোগ পেলেও খুব বেশি ম্যাচে খেলতে পারেননি এবং সেভাবে নিজের দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারেননি।

এবারের নিলামে ৯২০ কোটি রুপি খরচ করেও ১৮২ জন খেলোয়াড় দলে নেওয়া হয়েছে, তবে ৩০ লাখ থেকে ২ কোটি রুপি মূল্যমানের তালিকায় থাকা কোনো বাংলাদেশি ক্রিকেটারই দল পাননি। ফলে আইপিএলের সাথে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ১৪ বছরের সম্পর্ক এবার ছেদ পড়েছে।

আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এমন খেলোয়াড় খোঁজে, যারা পুরো মৌসুমে অংশ নিতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের জন্য বিসিবির NOC প্রদান করার ক্ষেত্রে অনীহা এবং অতীতের হতাশাজনক পারফরম্যান্স ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর মধ্যে তাদের প্রতি আগ্রহ কমিয়ে দিয়েছে।

আইপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ বন্ধ হওয়া শুধু ক্রিকেটের পারফরম্যান্সের কারণে নয়, এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিক, কূটনৈতিক এবং বোর্ডের নীতিগত জটিলতা। ভবিষ্যতে এই পরিস্থিতি পরিবর্তন হবে কিনা, তা কেবল সময়ই বলে দেবে। তবে বাংলাদেশি ক্রিকেটের জন্য এটি একটি বড় হতাশার বিষয়, যেহেতু আইপিএল বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চ এবং সেখানে উপস্থিতি বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য একটি গর্বের বিষয় হয়ে থাকে।

আপনার জন্য বাছাই করা কিছু নিউজ

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

চরম উত্তেজনায় শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

চরম উত্তেজনায় শেষ হলো বাংলাদেশ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচ, দেখেনিন ফলাফল

দীর্ঘ ১৫ বছরের অপেক্ষার অবসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সাদা পোশাকের ক্রিকেটে অবশেষে জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। জ্যামাইকায় কিংস্টনের স্যাবাইনা পার্কে... বিস্তারিত



রে